বেনাপোল কাস্টম হাউসে কলমবিরতি অব্যাহত, আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক

এনবিআরকে ভেঙে দুই ভাগে বিভক্ত করার প্রতিবাদে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান বেনাপোল কাস্টম হাউসে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কলমবিরতি চলছে। আজ সোমবার পঞ্চম দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলছে। বুধবার থেকে কাস্টমস কর্মকর্তাদের এ কলমবিরতি চলমান রয়েছে।

কাস্টমস অফিসারদের কলমবিরতির কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানিতে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি এবং বন্দরের পণ্য ওঠানামা ও খালাস প্রক্রিয়া স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে বলে জানান বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার।

সরেজমিন দেখা যায়, সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কলমবিরতির কারণে কাস্টম হাউজে কোনও কাজ হচ্ছে না। তবে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ও বন্দরে লোড-আনলোড প্রক্রিয়া এবং যাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিকভাবেই চলছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’-এর খসড়া কর্মকর্তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। বিভাগ দুটিতে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য পদ সংরক্ষিত না রেখে রাজস্বের কাজে অভিজ্ঞতা নেই এমন কর্মকর্তা পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে একদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞ নয় এমন কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, গতিশীলতা এবং কার্যকারিতা বিঘ্নিত হবে, অন্যদিকে এনবিআরে কর্মরত দুটি ক্যাডারের কাজের ক্ষেত্র ও পদোন্নতির সুযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাতকে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা।                                   

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘কাস্টমস অফিসারদের কলমবিরতির কারণে আমরা ব্যবসায়ীরা নানাবিধ হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমদানিকৃত মাল সঠিক সময়ে কাস্টমস থেকে ছাড় করতে পারছি না। মাল ছাড় করানোর জন্য দিনে মাত্র ২ ঘণ্টা সময় পাচ্ছি। এই ২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আমদানিকৃত মালামাল পরীক্ষণ করে শুল্কায়নের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই দেশের কথা চিন্তা করে এসব বিষয় নিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকারের  আলোচনা করা উচিত।’

কলমবিরতির কারণে নতুন করে কোনও পণ্যের আইজিএম ইস্যু করা হচ্ছে না। আগের ইস্যু করা আইজিএমের পণ্য আমদানি-রফতানি হচ্ছে। বেলা ৩টা পর্যন্ত কলমবিরতি চলবে। তারপর কাস্টমস হাউজে কাজ শুরু হবে বলে রাজস্ব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কাস্টমের কলমবিরতির কারণে শুল্কায়ন,পণ্য খালাস বিলম্বিত হচ্ছে। আমদানি-রফতানিও কমে যাচ্ছে। আমদানি পণ্য সময়মতো ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন না। তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন বলেন, ‘কাস্টম হাউসের কলমবিরতির পরেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক রয়েছে। রবিবার ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে ৩৩৪ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। এ সময় ভারতে রফতানি হয়েছে ১০৮ ট্রাক পণ্য। সোমবার সকাল থেকে দু দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক আছে।’