সিলেটে হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

সিলেটে শেখ মাসুক মিয়া (৩৫) নামে এক প্রবাসীকে হত্যা মামলায় চার ভাইসহ আট জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।

মাসুক মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার ফতেহপুর গুপ্তপাড়া গ্রামের মৃত শেখ মদরিছ আলীর ছেলে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ১৩ জুন হত্যার শিকার হন তিনি।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রবাসে থাকাকালে নিহত মাসুক মিয়া বিভিন্ন সময়ে জমি কেনার জন্য তার ভাইদের কাছে টাকা পাঠান। দেশে ফিরে জমি লিখে দেওয়ার কথা বললে তার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এরপর তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– নিহত মাসুকের ভাই শেখ আলফু মিয়া (৪১), শেখ পংকী মিয়া (৪৩), শেখ তোতা মিয়া (৫৭) ও শেখ আব্দুর রব ওরফে লেবু মিয়া (৬৩), শেখ পংকী মিয়ার স্ত্রী লাভলী বেগম, লেবু মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৮), একই গ্রামের মৃত আখলাছ আলীর ছেলে ফখর উদ্দিন ওরফে অহর (৪৬) এবং গ্রামতলা দাসপাড়া গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন ওরফে দিপু মিয়া (৪৩)। তাদের মধ্যে দিপু মিয়া ছাড়া সবাই আদালতে রায় ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকাল ৩টায় বাড়ি থেকে গোয়ালাবাজার যাওয়ার জন্য বের হন মাসুক মিয়া। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফেরায় মোবাইল ফোনে তার স্ত্রী কল করেন। প্রথমে কল ঢুকলেও পরে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন ওসমানীনগরের দাসপাড়ার ধানক্ষেত থেকে মাসুক মিয়ার ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। মরদেহ শনাক্তে এলাকায় মাইকিং করা হয়। সেই সংবাদ পেয়ে নিহতের ভাই আলফু ও শেখ তোতা ঘটনাস্থলে যান এবং ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় আলফু মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। কিন্তু মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ওসমানীনগর থানার তৎকালীন পরিদর্শক এসএম মাঈন উদ্দিন হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহতের ভাই আলফু, পংকী ও তোতাকে আটক করেন। পরে থানার এসআই মমিনুল বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি আল আসলাম মুমিন জানান, প্রবাসে থাকতে ভাইদের কাছে টাকা পাঠাতেন শেখ মাসুক মিয়া। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে নিজেদের নামে তারা জমি কেনেন। সেই বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে দুই ভাবি ও চার ভাই মিলে তাকে হত্যা করে।