সিলেটে ১০ বছরের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, নগরীতে জলাবদ্ধতা

সিলেট বৃষ্টিপাতটানা কয়েক ঘণ্টার প্রবল বর্ষণে সিলেট নগরীতে প্রচণ্ড জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে নগরীতে কখনও অঝোর ধারায় আবার কখনও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক  জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।  
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার অমিত হাসান জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় সিলেটে ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেটে এই মৌসুমে গত ১০ বছরের মধ্যে এটা রেকর্ড বৃষ্টিপাত বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টার পূর্ববর্তী ১২ ঘণ্টায় সিলেটে ৩৮.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
নগরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবিরাম বর্ষণের ফলে নগরীর আম্বরখানা, দরগাগেইট, হাওয়াপাড়া, উপশহর, জিন্দাবাজার, বিলপার, যতরপুর, মাছিমপুর, সুবিদবাজার, বনকলাপাড়া, হাউজিং এস্টেট, জালালাবাদ, লোহারপাড়া, বাগবাড়ি, কুয়ারপার, চারাদিঘীরপাড়, রায়হোসেন, কলবাখানি, কুয়ারপাড়, কাজলশাহ, পাঠানটুলা, খোজারখলা, ভার্থখলা, মোমিনখলা, বারখলা, পাঠানপাড়াসহ নগরীর অন্তত ৫০টি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।
নগরীর দরগা গেইট এলাকার বাসিন্দা কাউসার চৌধুরী জানান, জলাবদ্ধতার কারণে মঙ্গলবার সকালে তিনি চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। আম্বরখানা থেকে ইলেকট্রিক সাপ্লাই পর্যন্ত এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে যায়। এ কারণে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। পানি ঢুকে অনেক সিএনজি চালিত অটোরিকশার স্টার্টও বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকায় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল।
নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা হাজী ময়না মিয়া জানান, বেলা দেড়টার দিকে তার ভাইয়ের সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে একটি নির্ধারিত ফ্লাইট ছিল। কিন্তু, জলাবদ্ধতার কারণে তারা বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত আম্বরখানা এলাকায় জলাবদ্ধতায় আটকা পড়েছিলেন।
নগরীর হাওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় তারা অনেকেই বাসার বাইরে বের হতে পারেননি। 

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর কিছু নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। আমাদের টিম সেটা অপসারণের কাজ করছে।

তিনি বলেন, নগরী যাতে জলাবদ্ধ না হয় সেজন্য গত এক মাস ধরে সিটি করপোরেশনের প্রায় ১০০ শ্রমিক কাজ করছে। বৃষ্টি কমলে আবার ছড়া-নালা পরিস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

সিলেটে গত সোমবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বেড়ে যায়  বৃষ্টিপাতের মাত্রা। বিকাল ৪টার পর থেকে কিছুটা কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া এখনও গুমোট রয়েছে।

/বিটি/এমএসএম