নারায়ণগঞ্জে ৫ খুন

ভাগ্নে মাহফুজকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট

নারায়ণগঞ্জে একই পরিবারের দুই শিশুসহ পাঁচজনকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় ‘ঘাতক’ ভাগ্নে মাহফুজকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের আড়াই মাস পর বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ওই সময়ে মামলা সংশ্লিষ্ট আলামতও দাখিল করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের জানান, পাঁচ খুনের মামলায় মাহফুজকেই একমাত্র অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলায় আরও দুইজনের নাম থাকলেও তদন্তে কোনও সংশ্লিষ্টতা না থাকায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটে ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২৫টি আলামত।
চার্জশিট দাখিলের আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর গত ৮০ দিন ধরে চুলচেরা বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে তদন্ত করে চার্জশিটটি দাখিল করতে যাচ্ছি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূলত আবেগ ও সামাজিক অবক্ষয় কাজ করেছে। হত্যাকাণ্ডগুলো এক ব্যক্তিই করেছে। আমরাও চাই অপরাধীর উপযুক্ত বিচার হোক। এজন্যই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাখিল করছি। আশা করা যাচ্ছে বাদীপক্ষ যথার্থ বিচার পাবে।’

প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারি রাতে শহরের বাবুরাইল এলাকা থেকে তাসলিমা (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার ছোটভাই মোরশেদুল (২২) ও তার জা লামিয়ার (২৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকালে নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ভাগ্নে মাহফুজ, ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহানকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওইদিন রাতেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন গ্রেফতার করা হয় শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজ ও নাজমাকে। পরে ২১ জানুয়ারি আদালতে মাহফুজ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

আদালতে মাহফুজ স্বীকারোক্তি ছিল অনেকটাই গা শিউরে ওঠার মতো। মামীর সঙ্গে একই বিছানায় শুতে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভ থেকেই একে একে পাঁচজনকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তিনি। মাত্র চার ঘণ্টার ওই কিলিং মিশনে প্রথমে তাসলিমা ও সবশেষ হত্যার শিকার হয় স্কুলছাত্র শান্ত। এর মধ্যে তাসলিমা, লামিয়া ও মোরশেদুলের মাথায় শিলপাটার শিল দিয়ে আঘাত করে এবং শান্তকে দেয়ালে আঘাত করে হত্যা করা হয়। আঘাতের পর শ্বাসরোধ করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আর শিশু সুমাইয়া মারা যায় শিলের আঘাতে।

/বিটি/এজে/টিএন/