ঝালকাঠিতে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ: মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, আহত ১০

জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মন্দিরে ভাঙচুরঝালকাঠি শহরের বারচালাস্থ কালী মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় মন্দির কমিটি ও হামলাকারীদের মধ্যে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত ঝালকাঠি শহরের কালী মন্দিরে হামলা চালায়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, ‘রাতে মন্দিরে কার্তিক পূজা শেষে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্তত ২০ জন লোক ইট নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলাকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইট নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।’

ভাঙচুর চালানো হয় মন্দিরে

মন্দিরের লোকজন পুলিশের ওপরও হামলা চালায় বলে জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসান। হামলা থামাতে গিয়ে সদর থানার উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেনসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার পর ঝালকাঠি পুলিশ সুপার যোবায়েদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আ. রকিব, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসান, সদর থানার ওসি মাহে আলমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার প্রায় ২ ঘণ্টা পর বরিশাল থেকে র‌্যাব সদস্যরা এসে মন্দির এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।

চাল ব্যবসায়ী গোপাল দেবনাথ ও হাকিম হাওলাদার বলেন, ‘জমি নিয়ে মন্দির কমিটির সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল। এ নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। কিছুদিন আগেও জেলা প্রশাসক ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটির সদস্যরা তাদের জানিয়েছেন জমি দরকার হলে ছেড়ে দিতে হবে। রক্ষণাবেক্ষন কমিটি তাদের কিছু বলেনি। মন্দির কমিটির সদস্যরা রাতে হঠাৎ করে আকস্মিক হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর আহত করে। তাদের ক্যাশ বাক্স ভাঙচুর করে লুট করে নিয়েছে। মন্দির কমিটির লোকজন নিজেরাই প্রতিমা ভাঙচুর করে উল্টো তাদের ওপর দোষ দিচ্ছেন।

কালীবাড়ি মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার নাথ ভানু বলেন, ‘মন্দিরের পাশের বারচালার জমিতে থাকা চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জমি নিয়ে একটি মামলা চলে আসছিল। ওই চাল ব্যবসায়ীরাই হামলা চালিয়ে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করেছেন। মন্দিরে হামলায় হিন্দু চাল ব্যবসায়ীরাও অংশ নেন।’

এ হামলা সাম্প্রদায়িক নয় বলে জানান মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

স্থানীয় একটি সুত্রে জানা গেছে, মন্দির ও পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীদের মধ্যে জমি নিয়ে কয়েক বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। কিছুদিন পূর্বেও এ দু’গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মন্দির কমিটির পক্ষে রয়েছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর প্রনব কুমার নাথ ভানু। অপর দিকে বারচালা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আছেন পৌর কাউন্সিলর তরুণ কর্মকার।

ভিডিও:

/এএ/