‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শেখ হাসিনার মধ্যে দিদি-বোনের সম্পর্ক’

বরিশাল সফর করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার (ছবি: প্রতিনিধি)ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিদি-বোনের সম্পর্ক। সে সম্পর্ক বজায় থাকবে এটা আমি বিশ্বাস করি। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পারস্পরিক স্বার্থ বিষয়ে সেরকম কোনও মতবিরোধ আছে বলে আমার মনে হয় না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকুক, শান্তিতে থাকুক। তাদের (বাংলাদেশিদের) আপদে-বিপদে পশ্চিমবঙ্গের সহানুভুতি, সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিস্তার বিষয়টি ন্যাশনাল ম্যাটার। এটার বিষয়ে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যা বলার বলেছেন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতেও মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি খুব পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, এটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা উচিত। কেন্দ্রীয় সরকার কী করবেন বা না করবেন সেটা তাদের ব্যাপার।’

তিন দিনের সফরে বরিশাল এসে বৃহস্পতিবার রাতে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এসব কথা বলেন। কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি আ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) এর সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।বরিশাল সফর করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার (ছবি: প্রতিনিধি)

পশ্চিমবঙ্গের স্পিকার বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তখনকার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা আপনারা জানেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকার এসেছে, কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চিরকাল ছিল। এই সম্পর্ক বজায় থাকবে, আরও সুদৃঢ় হবে। কিছু কিছু পাওয়ারফুল নেশনস আছে তারা দু’দেশের সম্পর্কে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা সাকসেসফুল হবে বলে আমার মনে হয় না।’

বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম বাংলাদেশের বরিশালে। ১৯৫০ এর দশকে ৪/৫ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান তিনি। বিধানসভার স্পিকার বলেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশে আসার আমার সুযোগ হয়েছে তাই শিশুকালে ছেড়ে যাওয়া জন্মভিটা দেখতে ৬৭ বছর পর বরিশালে ছুটে এসেছি। ঠাকুরদা ও বাবা বরিশাল কোর্টে প্র্যাকটিস করতেন।’ শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে নগরীর জীবনানন্দ দাশ সড়কে অক্সফোর্ড মিশন চার্চ সংলগ্ন সেন্ট অ্যান’স মেডিক্যাল সেন্টার পরিদর্শনে যান তিনি। সেন্টারটি পরিদর্শনের পর সেখানকার সেবিকাদের সহযোগিতায় নিজের জন্ম রেজিস্ট্রারটিও তিনি খুঁজে পান।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন ‘দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান হল আজ এই ডগলাস বোর্ডিং নার্সিং হোমে (বর্তমানে সেন্ট অ্যান’স মেডিক্যাল সেন্টার) এসে। জন্মস্থানে আসার অনুভূতিই আলাদা। এটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।’

সেখান থেকে স্ত্রী নন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি যান নগরীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি ব্রজমোহন কলেজ সংলগ্ন নিজের পৈতৃক ভিটায়। কলেজের শহীদ মিনার গেটের উল্টো পাশে তার বাড়িটি ঘুরে দেখেন। তবে সেই বাড়ি দেশ ত্যাগের সময় বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

পরবর্তীতে তিনি বরিশালের অন্যতম পুরাতন নিদর্শন গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা মঠ ও আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা মনসা মন্দিরে যান।