টিসির দাবিতে আমতলীতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান ধর্মঘট





টিসির দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনবরগুনার আমতলীতে ছাড়পত্রের (টিসি) দাবিতে আমতলী সরকারি এ কে হাই স্কুলের ৩৮ জন শিক্ষার্থী অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে। মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিদ্যালয় চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য আমতলী সরকারি এ কে স্কুল থেকে ২১৫ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে ১৭৭ জন পরীক্ষায় পাশ করে এবং ৩৮ জন ফেল করে। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের নোটিশ অনুযায়ী, গত ৭ নভেম্বর থেকে ফরম ফিলাপ শুরু হয়ে, শেষ হয় ১৪ নভেম্বর। তবে ফেল করা ওই ৩৮ শিক্ষার্থীর ফরম পুরণের সুযোগ দেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারণে তাদের নির্বাচনি পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়েছে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয় শিক্ষকরা জানান, ওই ৩৮ শিক্ষার্থী তিন থেকে সাত বিষয়ে ফেল করেছে। বোর্ডের নিয়ম মতে, এসব শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ওই শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ না করায়, তারা টিসি দাবি করে আসছে। কিন্তু টিসি দেওয়ার সময় গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়ে গেছে। টিসি না পেয়ে ওই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে।

ফরম পূরণ করতে না পারা শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান, শুভ, সুমন ও মনিরা জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়াজ মোর্শ্বেদ, জগদীশ, সেকান্দার, আমিনুল ইসলাম, মঞ্জু ও নুরুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় তাদের ইচ্ছা করে ফেল করানো হয়েছে। তারা আরও জানান, তানিয়া নামের এক শিক্ষার্থী চার বিষয়ে ফেল করেছে, অথচ তার ফরম পূরণ হয়েছে। তাহলে আমাদের অপরাধ কী?। স্যারদের কাছে যারা প্রাইভেট পড়েছে তাদের পাশ করিয়ে ফরম পূরণ করানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

শিক্ষার্থী শরীফা, মিরাজ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম ও নাজমুল মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের ইচ্ছা করে ফেল করিয়ে ফরম পূরণ করেনি। তাই আমরা এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করবো না ভেবে টিসি চেয়েছি। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান আমাদের টিসি দিচ্ছেন না। তাই আমরা টিসির দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমান বলেন, ‘টিসি চাওয়া ৩৮ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনি পরীক্ষায় ৩ থেকে ৭ বিষয়ে ফেল করেছে। বোর্ডের নিয়ম অনুসারে ফেল করা শিক্ষার্থীর ফরমপূরণের নিয়ম নেই। ফরমপূরণ না করায় ওই শিক্ষার্থীরা টিসি চাচ্ছে, কিন্তু টিসি দেওয়ার সময় গত ৩ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ায় টিসি দেওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারণে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা করে ফেল করানো হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য নয়।’

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘বোর্ডের অনুমতি নিয়ে আসলে ওই শিক্ষার্থীদের টিসি দেওয়া হবে।’