বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কৃষক শ্যামল আচার্য তিনবছর আগে কৃষি দফতর থেকে ২১টি মাল্টার বারি-১ জাতের কলম নিয়ে ২৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। শ্যামল বলেন, ‘প্রথম বছর তেমন মাল্টা না হলেও দ্বিতীয় বছর ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করি। এ মৌসুমে ২১টি মাল্টা গাছে প্রচুর মাল্টা ধরেছে। বর্তমান বাজারে চীন থেকে আমদানি করা মাল্টা ২শ’ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ ওই মাল্টায় রস কম, একইভাবে স্বাদ নেই। বরিশালে উৎপাদিত মাল্টা যেমন রসালো, তেমনি সুস্বাদু। চারটি মাল্টায় এককেজি ওজন হয়। সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা কেজি দরে মাল্টা বিক্রি করলেও আমার এবছর আড়াই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চীনা থেকে আমদানি করা মাল্টায় ফরমালিন থাকে। আর আমাদের উৎপাদিত মাল্টা সম্পূর্ণ বিষমুক্ত। গতবছর আমি বাগান থেকেই সব আম বিক্রি করেছি। এবছরও একইভাবে বাগান থেকে বিষমুক্ত মাল্টা বিক্রি করার আশা করছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন মাল্টা নেওয়ার জন্য। আমি আশা করছি, আগামী বছর আমার বাগানে দ্বিগুণ মাল্টা উৎপাদিত হবে। এতে আমার লাভের অংশও বেড়ে যাবে।’
শ্যামল জানান, তার বাগানের উৎপাদিত মাল্টা দেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা এসে মাল্টা গাছের ফলনের বিষয়ে বুদ্ধি-পরামর্শ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার এলাকার পাঁচ কৃষক বড় পরিসরে মাল্টা গাছ লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের দেখাদেখি মাল্টা চাষে ঝোঁক বাড়ছে অন্যদের। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বরিশাল থেকে মাল্টা বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে।’
তিনি আরও জানান, বছরে একহেক্টর জমিতে দুইবার ধান চাষ করলে লাভ হতো দুই লাখ টাকা। কিন্তু একই পরিমাণ জমিতে মাল্টা চাষ করলে সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ পাওয়া যাবে ৫-৬ লাখ টাকা।’ মাল্টায় তেমন কোনও রাগ-বালাই নেই বলেও জানান তিনি।
এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশী বাতাবি লেবু গাছের সঙ্গে কলম করে বারি-১ জাতের মাল্টা গাছ লাগানো যায়। দুইবছর পরিচর্যার পর ওই গাছে বিপুল পরিমাণ মাল্টা ধরে। এ কারণে বাড়ছে মাল্টার বাগান। আমরা আশা করছি, আগামী বছর দ্বিগুণ জমিতে মাল্টা উৎপাদন হবে।’