ভোলার ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে বোনের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোনের সংবাদ সম্মেলন

ভোলায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম চৌধুরী পাপনের বিরুদ্ধে পরিবারের সম্পত্তি দখল, হামলা, মারধর করা ও জাল ওয়ারিশান সনদ তৈরি করে বোনকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব হল রুমে এক সংবাদ সম্মেলন এসব অভিযোগ করেন ছাত্রলীগ সভাপতির একমাত্র ছোট বোন পাপিয়া চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে পাপিয়া বলেন, ২০১৬ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ হন মা, তিনি ও ভাই পাপন। কিন্তু পাপন ক্ষমতা দেখিয়ে তাকে বাদ দিয়ে ওয়ারিশনামা বানিয়ে সম্পত্তি বিক্রি ও নামজারি করেন। এর প্রতিবাদ করলে পাপন নিজে ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমার এবং স্বামী মো. মাজেদুর রহমানের ওপর হামলা করে। বর্তমানে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। গোপনে ভোলা পৌরসভা থেকে ভুয়া ওয়ারিশান সনদ করে সব সম্পত্তি নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করে আমার ভাই। এ অবস্থায় বাবার সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি ভাইয়ের নির্যাতনের বিচার দাবি করেন পাপিয়া।

তিনি আরও বলেন, ওয়ারিশান সনদে আমার নাম বাদ দেওয়ার বিষয়টি আমি ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদকে জানিয়েছি। তার নির্দেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে আমার সম্পত্তি গত ৩০-১০-২০ইং আমার নামে নামজারি করে দেওয়া হয়।

এ সংবাদ শুনে পাপন চৌধুরী আমার শহরের কালীবাড়ী রোডের বাসায় গিয়ে লোকজন নিয়ে আমাকে মারধর করে এবং ৫৫ হাজার টাকা, গলার এক ভরির চেইন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ সময় আমার স্বামীসহ পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়ে আসে। এ ঘটনায় আমি ভোলা সদর থানায় মামলা করি। মামলা নম্বর-জিআর ৬৪৬/ ১।

পাপিয়া আরও বলেন, দীর্ঘ তিন বছর ধরে পাপন চৌধুরী আমার ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করছে। যা মায়ের অনুরোধে কাউকে জানাতে পারিনি। সে এখন আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে যাতে আমি আমার সম্পত্তিতে না যাই। এ অবস্থায় আমি স্বামী ও একমাত্র শিশু সন্তান সাফওয়ানকে নিয়ে আতঙ্কে আছি। ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এ ধরনের লোককে দল থেকে বহিষ্কার করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনও জানান পাপিয়া চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে পাপিয়ার স্বামী মো. মাজেদুর রহমান ও তার একমাত্র সন্তান উপস্থিত ছিল।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম চৌধুরী পাপনএ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন মামলার কথা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে।

ভোলা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাইনুল ইসলাম শামীম বলেন, পৌরসভা থেকে কোনও ভুয়া ওয়ারিশান সনদ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম চৌধুরী পাপন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি আমার বোনের কিংবা তার পরিবারের কোনও জমি আত্মসাৎ কিংবা বিক্রি করিনি। এমনকি ওয়ারিশান সনদেও বাদ দেইনি। রাজনৈতিক কারণে তার বোনকে ব্যবহার করে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।