ডাক্তারের মৃত ঘোষিত গর্ভের বাচ্চা জীবিত প্রসব!

ডাক্তারের মৃত ঘোষিত গর্ভের বাচ্চা জীবিত প্রসব করেছেন এক মা। ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়কে একটি অ্যাম্বুলেন্সে এ সন্তান জন্ম দেন উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শরিফের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৩)।

প্রসূতি ফাতেমা বেগম ও তার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, শনিবার সকালে স্থানীয় ধাত্রী নাজমা বেগম স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে রাতে প্রসূতিকে উপজেলা সদরের সিটি হার্ট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মরত চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়ার কাছে নিয়ে আসেন স্বজনরা। এখানে করানো আল্ট্রাসনো রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থাপত্রে ‘আই ইউ ডি’ অর্থাৎ ‘জরায়ুর ভিতরে সন্তান মৃত’ উল্লেখ করে ওই রোগীকে বরিশাল রেফার্ড করেন চিকিৎসক। রবিবার প্রসূতিকে নিয়ে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায় তার পরিবার। এখানে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. নুর মোহাম্মদ তালুকদার বেসরকারি ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়ার রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থাপত্রে ‘আই ইউ ডি’ উল্লেখ করে হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি দেন।

প্রসূতির মামি জান্নাতুল ফেরদাউস জানান চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর প্রসূতি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অপারেশন করা সম্ভব না বলে রোগীকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রসূতির পরিবার আর্থিক অসচ্ছল হওয়ায় সন্ধ্যায় স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে প্রসূতিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করলে হাসপাতালের সামনের সড়কেই তিনি জীবিত পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এসময় পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়া সংবাদকর্মীদের কাছে ‘আই ইউ ডি’র ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আলট্রায় গর্ভের শিশুর হার্টবিট না থাকায় ‘আই ইউ ডি’ উল্লেখ করে দ্বিতীয়বার দেখার জন্য বরিশাল রেফার্ড করা হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বশাক বলেন, ‘আই ইউ ডি’ মানে জরায়ুর ভেতরে নবজাতক মৃত। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, শিশুর হার্টবিট না থাকলে অনেক সময় এরকম ঘটনা ঘটতে পারে।

ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে আরও সাবধান ও সচেতন হতে বলা হবে বলেও জানান তিনি।