কেমন আছেন সেই মা

শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ আছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সেই শিক্ষিকা সেলিনা পারভিন। রবিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন করোনা ওয়ার্ডে কর্মরতরা। সেলিনা নিজেও জানিয়েছেন, তিনি আগের চেয়ে কিছুটা ভালো বোধ করছেন।

শ্বাসকষ্টে থাকা মাকে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ মোটরসাইকেলে করে শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিয়ে আসার সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা সেই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে ভাইরাল হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসেন গণমাধ্যম কর্মীরা। ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট তৌহিদ মোর্শেদ টুটুল।

মোটরসাইকেল চালক হচ্ছেন রোগীর ছেলে কৃষি ব্যাংকের ঝালকাঠি শাখার কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান। পেছনে বসা ছিলেন তার মা ও নলছিট বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রেহানা পারভিন। ঝালকাঠির নলছিটি পৌর শহরে তারা বসবাস করেন।

কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান বলেন, করোনা পজিটিভ হওয়ার পর মাকে বাসায় রাখা হয়। তিনি কোনওভাবে হাসপাতালে যেতে চাচ্ছিলেন না। এ জন্য ঘরের একটি কক্ষে তার চিকিৎসা চলছিল। শনিবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। দুপুরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমিও অস্থির হয়ে উঠি। কিভাবে মাকে চিকিৎসা দেবো। কোনও গাড়িও পাচ্ছিলাম না। করোনা রোগী হওয়ায় কেউ রাজি হয়নি।

উপায়ন্তর না পেয়ে আমার নিজস্ব মোটরসাইকেলে করে মাকে মেডিক্যালে আনার সিদ্ধান্ত নেই। প্রথমে আমি মোটরসাইকেলে উঠি। এরপর আমার কোমরের সঙ্গে সিলিন্ডারটি বেঁধে নেয়ার পর মাকে তুলে দেন আমার স্বজনরা। ছুটি চলি মেডিকেলের উদ্দেশে।

এরপর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পেরোনোর সময় এক সার্জেন্ট আমাকে থামতে বলে আবার চলে যেতে বলেন। তিনিই ছবিটি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিভিন্ন স্থান থেকে আমার কাছে মোবাইল আসে। সবার দোয়ায় আমার মা আগের চেয়ে ভালো।

ট্রাফিক সার্জেন্ট তৌহিদ মোর্শেদ টুটুল বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট ডিউটিরত অবস্থায় ওই দৃশ্য আমার চোখে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আমি তা মোবাইলে ধারণ করে পোস্ট করি। করোনা নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে ছবিটি পোস্ট করা।

এ ব্যাপারে করোনা ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ কোহিনূর বেগম জানান, রেহেনা পারভীন আগের চেয়ে অনেক ভালো।