বরিশালে সংঘর্ষের ঘটনায় যে তথ্য এখনও অজানা

বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা কত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে সে তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যরা কোনও গুলি চালায়নি।

জানা গেছে, ১৮ আগস্ট (বুধবার) রাতে জেলার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের বাসভবনে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করে। এ সময় ইউএনওকে বাসার নিচতলায় ঘেরাও করে। তখন ইউএনও’র নির্দেশে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা গুলি বর্ষণ করেন।

এতে সেখানে থাকা বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এদের মধ্যে মনির, তানভীর এবং ফারুক ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া অনেকে পুলিশের এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হন।

ঘটনার দিন আনসার সদস্যরা কত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে তা জানার জন্য বরিশাল জেলা আনসার কমান্ডার আমমার হোসেনের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি কেটে দেন।

তবে তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে। ওই কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পরই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে পরিষ্কার করা হবে।

তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আলী আশরাফ ভূইয়া নিশ্চিত করেছেন, ১৮ আগস্ট রাতের ঘটনায় পুলিশ এক রাউন্ডও গুলি চালায়নি।

প্রসঙ্গত, ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করে। এ সময় ইউএনও-এর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদের পরিচয় জানতে চান। তারা সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বাগবিতণ্ডা হয়। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী সেখানে যান। পরে সেখানে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় নেতাকর্মীরা ইউএনও-এর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়েন আনসার সদস্যরা। হামলা ও সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন ওসি ও প্যানেল মেয়রসহ সাতজন। এছাড়া পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।

ওই ঘটনায় ইউএনও ও পুলিশের পক্ষ থেকে মেয়রসহ আওয়ামী লীগের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তাদের মধ্যে ২২ জন কারাগারে আছেন। পরবর্তী সময়ে মেয়রের পক্ষ থেকে ইউএনও এবং ওসিসহ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হলে বিচারক পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিআইবি) তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় গত রবিবার (২২ আগস্ট) মেয়র, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উভয় পক্ষ মেনে নেওয়ায় সবার মুখে হাসি ফোটে। তবে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না ইউএনও মুনিবুর রহমান।