খালি হচ্ছে বরিশালের করোনা ওয়ার্ড

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক্সটেনশন ভবনের ৩০০ শয্যার করোনায় ওয়ার্ড খালি হওয়ার পথে। যেখানে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ রোগী চিকিৎসা নিতেন সেখানে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকাল পর্যন্ত চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৬ জন। রোগীর ভর্তি কমার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে শনাক্ত ও মৃতুর হার।

১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যু ছিল শূন্যের কোটায়। সাত দিনের ব্যবধানে করোনা ওয়ার্ডে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। ওই সময়ে পিসিআর ল্যাবে ৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি ৩৬ রোগী। যার মধ্যে ২০ জন করোনা পজিটিভ। করোনায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। সুস্থ হয়েছেন চার জন। মেডিক্যালের পিসিআর ল্যাবে ১৯২ নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।

২০ সেপ্টেম্বর করোনা ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। ওই দিন ভর্তি ছিলেন ৩৬ জন। যার মধ্যে ২১ জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। ওই দিন ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

১৯ সেপ্টেম্বর কারও মৃত্যু হয়নি। সুস্থ হয়েছেন ১১ জন। ওই দিন পিসিআর ল্যাবে ৯০ নমুনা পরীক্ষায় একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ১১ শতাংশ।

১৮ সেপ্টেম্বর করোনা ওয়ার্ডে কেউ মারা যায়নি। সুস্থ হয়েছেন দুই জন। একই দিন ১৭১ নমুনা পরীক্ষায় ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

১৭ সেপ্টেম্বর করোনা ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। ওই দিন ছাড়পত্র নিয়েছেন একজন। ১৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩৭ জন। এর মধ্যে ২১ জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। ওই দিন সুস্থ হয়েছেন পাঁচ জন। একই দিন ১৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ জনের করোনা ধরা পড়ে। শনাক্তের হার ছিল ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

১৫ সেপ্টেম্বরও ৩৭ রোগী ভর্তি ছিলেন। ওই দিন মারা গেছেন দুই জন। এর মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। একই দিন সুস্থ হয়েছেন পাঁচ জন। ১৩৪ নমুনা পরীক্ষায় ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, তিন কারণে করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে। তা হলো যথাসময়ে লকডাউন বাস্তবায়ন, মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাস্ক ব্যবহার এবং টিকা গ্রহণ। তবে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।

এ পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছেন সাত হাজার ১৭৩ জন। যার মধ্যে দুই হাজার ৩২৬ জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। এই সময়ের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়েছেন পাঁচ হাজার ৭৬০ জন। যাদের মধ্যে এক হাজার ৮৮৯ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। একই সময়ে মারা গেছেন এক হাজার ৩৭৭ জন। যার মধ্যে ৪২২ জন ছিলেন করোনা পজিটিভ।

করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন আলতাফ হোসেন বলেন, রোগী কম থাকায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বলার আগেই পাচ্ছি। অক্সিজেন থেকে শুরু করে ওষুধও দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যা না দেয় তা বাইর থেকে কিনতে হয়। আমার ইচ্ছা আছে, রোগী শতভাগ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ওয়ার্ড ছেড়ে যাবো না।