প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলেকে ৯ বছর লুকিয়ে রাখলেন বাবা-মা

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নিজ ছেলেকে লুকিয়ে রেখে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন বাবা-মা। এ মামলায় তিন বছর কারাভোগ করেন আসামিরা। দীর্ঘ নয় বছর পর সেই ‘অপহৃত’ যুবককে উদ্ধার করেছেন মামলার আসামিরা।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) তারা খোঁজ পান, রাসেল নামের ওই যুবক ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় আত্মগোপনে আছেন। এরপর মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বরিশালের গৌরনদী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তারা।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, অপহরণ মামলার বাদী রাসেলের মা মরিয়ম বেগম। তিনি গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের জালাল মৃধার স্ত্রী। মামলার প্রধান আসামি একই উপজেলার বাসুদেবপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এস রহমান মৃধা। বাদীর স্বামীর সঙ্গে তাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।

রহমান মৃধা বলেন, মামলার পর থেকেই আমরা নিশ্চিত ছিলাম, মরিয়ম ও তার স্বামী জালাল নিজের ছেলেকে লুকিয়ে রেখে মিথ্যা মামলা করেছেন। কারণ, আমরা রাসেলকে অপহরণ করিনি। আমাদের স্বজন থেকে শুরু করে মরিয়মের ২-১ জন পরিচিত লোকের সঙ্গেও কথা বলি। সোমবার রাতে খবর আসে, ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় রাসেলকে দেখা গেছে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লোক পাঠিয়ে এবং স্থানীয়দের সহায়তায় রাসেলকে আটক করে গৌরনদী এনে থানায় সোপর্দ করি।

তিনি আরও বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গৌরনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই ফোরকান হাওলাদার ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এ মামলায় আমাদের দীর্ঘদিন কারাভোগ করতে হয়েছে। তিন বছর পর জামিনে বের হই।

এ ব্যাপারে এসআই ফোরকান হাওলাদার বলেন, তখন যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল তা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই দেওয়া হয়। আজ রাসেলকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এরপর আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাদী মরিয়ম বেগম ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল আদালতে ১৪ জনকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, তাদের ১৪ বছরের সন্তান রাসেল মৃধাকে মারধরের পর অপহরণ করে আসামিরা।