কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে বিআরটিসির এ অবস্থা: চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বরিশাল ডিপোর সব অনিয়ম তদন্তপূর্বক দোষীদের চিহ্নিত করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, বিআরটিসির আজকের অবস্থার কারণ, অনেকটাই কর্তৃপক্ষের গাফিলতি।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিআরটিসি বরিশাল ডিপোর সব বিভাগের কার্যক্রম পরিদর্শন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হয়ে এ কথা জানান তিনি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় কিছু অনিয়মের তথ্য পাওয়ার পর জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের মুখোমুখি করতে কাজ শুরু হয়েছে। দোষী রেহাই পাবে না। একইসঙ্গে অতীতে যাদের দুর্নীতির কারণে বিআরটিসির বদনাম এবং ক্ষতি হয়েছে তাদের সবার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক শাস্তি অপেক্ষা করছে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিআরটিসির আজকের অবস্থার কারণ, অনেকটাই কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। এতদিন সারাদেশের বিআরটিসির তদারকি হয়নি সঠিকভাবে। এই খাতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে যেমন- যানবাহনের মেইনটেইনেন্স ও কর্মী সংকট। এর দ্বারাই তৈরি হচ্ছে দুর্নীতির সুযোগ।’

তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের পরে বিআরটিসিতে কোনও নিয়োগ হয়নি। এখানে নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক চালক, কন্ট্রাক্টর এমনকি নিরাপত্তা প্রহরী। সারাদেশে এই খাত মোটামুটিভাবে পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ছয় হাজার কর্মী প্রয়োজন। তবে এর বিপরীতে আছে অর্ধেক। যেখানে গাড়ী দুই হাজার সেখানে একেকটি গাড়ির জন্য দুজন করেও লোক নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী বিআরটিসিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে ইতোমধ্যেই লোকবল নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছেন যা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’

সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিজস্ব জনবলের অভাবে বাইরের লোকের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। এর জন্যই অনেক সময় দুর্নীতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। বর্তমানে কিছু চালক সমস্যা করে। এরা দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের সহায়তায় এগুলো করে।’

বরিশাল ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামানের (বাবু) প্রসঙ্গ টেনে দুর্নীতিগ্রস্তদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবে না। বর্তমানে বিভাগীয় মামলা রয়েছে ৩৮টি। এগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্তাধীন রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্তরা তটস্থ আছে। এত সহজে কেউ ছাড় পাবে না। সব কিছু নিয়মের মধ্যে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে স্টাফরা মাসের অর্ধেক চলে গেলেও বেতন ভাতা পেতো না, সেখানে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাসের ১ তারিখের মধ্যে বেতন হচ্ছে।’

অব্যবহৃত মালামালের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অব্যবহৃত সকল মালামাল ভবিষ্যতে সাত দিনের মধ্যে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। সাংবাদিকরা সহায়তা করলে ৫০ শতাংশ কাজ এগিয়ে যাবে। সারাদেশের ন্যায় বরিশালের বিআরটিসিকেও সমৃদ্ধ করা হবে। এখানে যাত্রীদের জন্য থাকবে যাত্রী ছাউনি, থাকবে ওয়াশিং প্লান্টসহ নানা সুবিধা। অতিদ্রুত বিআরটিসিকে আধুনিক ও আদর্শ করে সাজানো হবে।’