দৌলতখানে কয়েকটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, সহিংসতার আশঙ্কা

ভোলার দৌলতখানে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন আগামী বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর)। উপজেলার সাত ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১৭, সংরক্ষিত মহিলা ৫৬ ও সাধারণ সদস্য হিসেবে ১৯৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কয়েকটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করছেন প্রার্থীরা।

এদিকে, নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোসহ নানা অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নির্বাচনে সাত জন নৌকার প্রার্থী। নয় জন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও একজন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সহিংসতার অভিযোগ আসছে। এ নিয়ে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ করছেন। ভোটাররা সহিংসতার আশঙ্কা করছেন। ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে রয়েছে তাদের শঙ্কা।

শনিবার (০৬ নভেম্বর) দুপুরে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে দৌলতখান উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সবুজকে আটক করেছে পুলিশ। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই দিন রাতে চরপাতা ২ নম্বর ওয়ার্ডে দুই মেম্বারের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।এতে স্থানীয় সাংবাদিক জসিম রানাসহ ১৫ জন আহত হন।

ভবানীপুর ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. আওলাদ হোসেন ও আব্দুল মান্নান জানান, ভবানীপুরের পাঁচ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। বহিরাগতদের দিয়ে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছেন নৌকার প্রার্থী। তার অনুসারীরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ত্রাস সৃষ্টি করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।

তবে নৌকার প্রার্থী গোলাম নবী নবু বলেন, ইউপি নির্বাচন এত সহজ নয়। যে কেউ দাঁড়ালেই নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই।

মদনপুর ইউনিয়নে ২৩ অক্টোবর নির্বাচনি প্রচারণায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের বাধা দেওয়া হয়। এতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হন। এখানের নয় কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী।

এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামালউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা আমার নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর ও কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালান। আমার ইউপির সবগুলো কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

নৌকার প্রার্থী নাসির উদ্দিন নান্নু বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলছেন। এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলে আমি নির্বাচিত হবো।

১ নভেম্বর উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের বাংলাবাজারে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ছয়-সাত জন আহত হন। এ ছাড়া উত্তর জয়নগর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ড, চর খলিফা ইউপির ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ড, চরপাতা ইউপির ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, দৌলতখান উপজেলায় ভোটার এক লাখ ১৩৯। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ১৭ জন। তার মধ্যে চর খলিফা ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অমি চৌধুরী (নৌকা) চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ ছাড়া সদস্য পদে ১৯৬ ও সংরক্ষিত আসনে ৫৬ জন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কার বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশনার আব্দুস সালাম খাঁন বলেন, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছে। সেখানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ছিলেন। নির্বাচনে যে প্রার্থী কিংবা তার সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।