ধসে পড়লো পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসের মেঝে, আহত ১৫

পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসের মেঝে ধসে পড়েছে। এতে সৃষ্টি হওয়া পাঁচ ফুট গভীর গর্তে পড়ে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাতে সাত জনকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় তিনতলা ওই ভবনের নিচতলার ১০৭নং কক্ষের সামনের অংশ ধসে যায়। বর্তমানে ছাত্রাবাস ভবনটির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন আবাসিক ছাত্ররা।

হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীরা হলেন– বাপ্পি, আতিক, মামুন, আজাদ, রুমান, রাকিব ও নাইম। তাদের মধ্যে চার জন অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। তাদের হাসপাতাল থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় পরীক্ষার হলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই শিক্ষার্থীদের সহপাঠী রায়হান।

আহত শিক্ষার্থী রুমান ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্ররা সবাই ছাত্রাবাসে আসার পরে গতকাল রাত ১১টার দিকে ওই ভবনের নিচতলার ১০৭ নম্বর কক্ষে ছাত্রাবাসের আসন বণ্টন নিয়ে বৈঠক হয়। পরে বৈঠক শেষে ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্র বারান্দায় বের হন। এ সময় হঠাৎ পাকা মেঝের নিচে ধসে পড়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা তাতে পড়ে যায়। পরে তাদের চিৎকারে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রায়হান বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে কলেজের মাঠে বালি ভরাট করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বালির সঙ্গে থাকা পানি বের হয়ে যাওয়ায় ওই ভবনের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে।’

পটুয়াখালী সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ শাহ আলমগীর বলেন, ‘রাত ১১টার পরে গ্রাউন্ড ফ্লোরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলছিল, হঠাৎ ফ্লোর ধসে ছয়-সাত জন আহত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে কিছুদিন আগে ড্রেজার দিয়ে কলেজের মাঠে বালি ভরাট করা হয়েছে। ওই ড্রেজারের পানি  সরার সময় ভবনের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে পারে। এই ভবন শিক্ষা প্রকৌশলীর অধীনে তারা এসেছে।বিষয়টি প্রকৌশলীরা ভালো বলতে পারবেন।’

তিনতলা ওই ছাত্রাবাস ভবনটি ২০০৮ সালে নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের পটুয়াখালী জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী হাদিউজ্জামান খান বলেন, ‘ড্রেজার দিয়ে কলেজের মাঠ ভরাট করা হয়েছে। তখন ওই মাঠ থেকে পানি সরানোর ব্যবস্থা করেনি তারা। এজন্য মাঠের পানি ওই ভবনের পশ্চিম দিকের নিচ দিয়ে সরতে থাকে। একপর্যায়ে ভবনের নিচের বালি সরে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ভবনের নিচ তলার ফ্লোরে ইট বিছিয়ে তার উপরে ঢালাই করা ছিল। দেখে বোঝার উপায় নেই, নিচে ফাঁকা। রাতে ছাত্ররা ওখানে গেলে নিচের ফাঁকা জায়গার অংশটুক তাদের নিয়ে ভেঙে পড়ে।’

তিনি আরও জানন, ইতোমধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।