নতুন জীবনে অদম্য ফাল্গুনী

২০০২ সালের ঘটনা। বাড়ির ছাদে কাপড় শুকাতে ওঠেন প্রেয়সী সাহা ফাল্গুনী। এ সময় বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারান। তখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তেন ফাল্গুনী। এরপর থেকে শুরু হয় অন্য এক জীবন। হাত হারালেও মনোবল শক্ত রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষে বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

সম্প্রতি নিজ এলাকার দীর্ঘদিনের পরিচিত সুব্রত মিত্রকে বিয়ে করেছেন ফাল্গুনী। সুব্রত পটুয়াখালীতে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তাদের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপায়। গত বুধবার রাতে বরিশালের শঙ্কর মঠে সুব্রত-ফাল্গুনীর বিয়ে হয়। 

জগদীশ চন্দ্র সাহার মেয়ে ফাল্গুনী হাত হারানোর পরও থেমে থাকেননি। পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। ২০১১ সালে গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০১৩ সালে উত্তরা ট্রাস্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। এবার বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করলেন।

বরিশালের শঙ্কর মঠে সুব্রত-ফাল্গুনীর বিয়ে হয়

ফাল্গুনী জানান, পাঁচ বছর আগে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছোটবেলা থেকেই দুজন দুজনকে চিনতেন। এরপর একদিন তাদের মনের কথা প্রকাশ করলেন। তখন থেকেই প্রেম। প্রেম শুরুর পর নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়েই পরিকল্পনা করতেন।

সুব্রত বলেন, ‘ছোট থেকেই ওকে দেখেছি। তবে পরিচয় হয় পাঁচ বছর আগে। দুই বছর আগে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও সবাইকে রাজি করাতে একটু সময় লেগে যায়। আমরা দুই জনেই বরিশালে চাকরি করি। তাই বরিশালেই বিয়ে করছি।’

ফাল্গুনী বলেন, ‘দুর্ঘটনা পর আমার দুই হাতের কনুই নিচ থেকে কেটে ফেলে দিতে হয়। কিন্তু তাতে থেমে থাকিনি। পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। এরপর নিজ যোগ্যতায় চাকরিও পেয়েছি। পাঁচ বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়ের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেলো। সবার কাছে দোয়া চাই।’

স্বজনরা বলেন, যারা সারাজীবন সংসার করবে তারাই নিজেদের পছন্দ করেছে। এ কারণে দুই পরিবারের কোনও আপত্তি ছিল না। তারা চান, তাদের বাকি জীবনটা হাসিখুশিতে ভরে থাক।