যেখান থেকে লঞ্চে আগুনের সূত্রপাত, জানালেন তদন্ত কমিটির প্রধান

অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ দুর্ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক যুগ্ম সচিব মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘ঝালকাঠিতে মর্মান্তিক লঞ্চ দুর্ঘটনার বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। একাধিকবার ঘটনাস্থল ও লঞ্চ পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লেগেছে। পরে আরও কিছু কারণে এটি ছড়িয়ে পড়েছে।’

রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) বরগুনার সার্কিট হাউস মিলনায়তনে লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলতে এসে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

যুগ্ম সচিব তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত এখনও চলমান। তাই কংক্রিট কোনও তথ্য দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে একটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করা যায়। লঞ্চের কোনও স্টাফের সঙ্গে আমরা এখনও কথা বলতে পারিনি। সেই রাতে আসলে কী ঘটেছিল, এটা প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে শোনার জন্যই আমরা বরগুনা এসেছি।’

বরগুনার সার্কিট হাউসে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য নৌপুলিশের বরিশাল রেঞ্জের পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার পরিচালক মামুন-অর-রশিদ ও বিআইডব্লিউটিএ-এর অতিরিক্ত পরিচালক (বন্দর) মো. সাইফুল ইসলাম। তাদের সঙ্গে ছিলেন বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান।

সদরঘাট থেকে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে অভিযান-১০ লঞ্চ। এরপর থামে চাঁদপুর, বরিশাল ও দপদপিয়া ঘাটে। তিন ঘাটেই যাত্রীরা ওঠানামা করেছেন। দপদপিয়া থেকে লঞ্চটি ছাড়ে বেতাগীর উদ্দেশে। এর মাঝেই বাধে বিপত্তি। রাত ৩টায় সুগন্ধা নদীতে চলমান লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুনের সূত্রপাত। পানিতে ভাসমান এই যানে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুনের লেলিহান। প্রাণে বাঁচতে যাত্রীরা ঝাঁপ দিতে থাকেন সুগন্ধা নদীতে। এতে অনেকে প্রাণে বাঁচলেও পর্যন্ত ৩৭টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। উদ্ধার লাশের মধ্যে ২৩টির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এসব লাশের নমুনা সংগ্রহ করে শনিবার বরগুনার পোটকাখালী গ্রামে খাকদোন নদীর পাড়ের গণকবরে দাফন করা হয়েছে। পরিচয় মিলেছে এমন ১৪ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।