‘আগুন লাগার পর দ্রুত লঞ্চ পাড়ে থামালে এত মৃত্যু হতো না’

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেইনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান।

রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে তিনি সুগন্ধা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি আগুনে পুড়ে যাওয়া লঞ্চ ও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।

পরে দুপুর ১২টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। পুরো তদন্ত শেষ করতে আমাদের প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপর আমরা আগুনের বিষয়ে একটি ধারণা দিতে পারবো। আগুন লাগার পর দ্রুত লঞ্চটি অ্যাংকর (নোঙর) করে পাড়ে থামিয়ে রাখলে এত লোকের মৃত্যু হতো না, যেহেতু নদী খুব ছোট। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ সেটা করেনি। ফলে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান

সদরঘাট থেকে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে অভিযান-১০ লঞ্চ। এরপর থামে চাঁদপুর, বরিশাল ও দপদপিয়া ঘাটে। তিন ঘাটেই যাত্রীরা ওঠানামা করেছেন। দপদপিয়া থেকে লঞ্চটি ছাড়ে বেতাগীর উদ্দেশে। এর মাঝেই বাধে বিপত্তি। রাত ৩টায় সুগন্ধা নদীতে চলমান লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুনের সূত্রপাত হয়। পানিতে ভাসমান এই যানে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন। প্রাণে বাঁচতে যাত্রীরা ঝাঁপ দিতে থাকেন সুগন্ধা নদীতে। এতে অনেকে প্রাণে বাঁচলেও এখন পর্যন্ত ৩৭টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। উদ্ধার লাশের মধ্যে ২৩টির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এসব লাশের নমুনা সংগ্রহ করে শনিবার বরগুনার পোটকাখালী গ্রামে খাকদোন নদীর পাড়ে গণকবরে দাফন করা হয়েছে। পরিচয় মিলেছে এমন ১৪ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।