স্কুল ছুটি দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান

বরিশাল নগরীর একটি স্কুল ছুটি দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) নগরীর আমনতগঞ্জ এলাকার মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন অভিভাবকরা। ওই স্কুলে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেন বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন সিকদার।

একাধিক অভিভাবক জানান, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে যায় তাদের সন্তানরা। এরপর নির্ধারিত সময়ের আগেই বাসায় ফেরে তারা। কারণ জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, স্কুল ক্যাম্পাস বিয়ের জন্য সাজানো হয়েছে বলে আগেই ছুটি দিয়েছেন শিক্ষকরা।

তারা আরও জানান, একাধিক শিক্ষকের মোবাইলে কল দিয়ে জানা যায়, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নির্দেশে স্কুল ছুটি দিয়ে বিয়ের আয়োজনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এখানে শিক্ষকদের কিছু করার ছিল না। তাদের পক্ষ থেকে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।

একই জায়গায় থাকা মোজাম্মেল খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চনা রানী জানান, স্কুল চলাকালে এ ধরনের আয়োজনে তাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে ক্লাসও নিতে পারেননি তারা। তাছাড়া এ ধরনের একটি অনুষ্ঠান দেখে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ছিল মাঠের দিকেই। তারপরও শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানান তিনি।

স্কুলের মাঠেই করা হয়েছে খাবারের আয়োজন

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফুজ্জামান খান রনিকে কল করে বলা হলে তিনি জানান, মেয়ের বাবার অনুরোধে অনুমতি দিয়েছেন।’

তবে এ বিষয়ে মোফাজ্জেল হোসেন খান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিয়ের আয়োজনকারী ইয়ার হোসেন সিকদার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার অনুরোধে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অনুমতি দিয়েছেন। আমার মেয়েও এই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল। এ কারণে তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি কোনও কিছু না ভেবে অনুষ্ঠান করতে বলেন।’

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল লতিফ হাওলাদার বলেন, ‘স্কুল চলাকালে এ ধরনের অনুষ্ঠান করার কোনও নিয়ম নেই। আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। ওই স্কুলের শিক্ষকদের শোকজসহ তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’