এমপি রিমনের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ, বৃদ্ধের অনশন

বরগুনা-২ (পাথরঘাটা-বামনা-বেতাগী) আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে বেলায়েত হোসেন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। জমি দখলমুক্তের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বেলা ১১টায় বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে তিনি জায়নামাজ বিছিয়ে অনশনে বসেন। পুলিশ সুপার উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিলে রাতে অনশন ভাঙেন তিনি।

পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের পূর্ব লেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কাকচিড়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সামনে কাকচিড়া-লেমুয়া সড়কের দক্ষিণ পাশে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছেন এমপি রিমন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও ফল মেলেনি। পরে পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দিই। এতেও কোনও সমাধান হয়নি। নিরূপায় হয়ে জমি দখলমুক্তের দাবিতে অনশনে বসি।’

বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে এমপি রিমনের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আল-আমিন সৈকত পরিচয়ে সেখানে এসে আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ব্যানার ছিঁড়ে উঠিয়ে দেন। পরে স্থান পরিবর্তন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বটগাছের নিচে বসি।’

জমির দলিল দেখিয়ে এই বৃদ্ধ জানান, পাথরঘাটা উপজেলার লেমুয়া মৌজার ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি নিয়ে আদালতে বণ্টন মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলায় সম্প্রতি জমিতে স্থিতাবস্থা জারি করে আদেশ দিয়েছে আদালত। গত রবিবার দুপুর ১টার দিকে গিয়ে দেখেন, জমিতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। পরদিন পাথরঘাটা থানায় জমি দখলের লিখিত অভিযোগ করেন। বুধবার দেখতে পান, ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এরকম কোনও বিষয় আমার নজরে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে এমপির সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে।’

জমি দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৯৯৭ সাল থেকে এই জমি ভোগদখল করে আসছি। আমার দলিলে ৫ শতাংশ জমি রয়েছে, কিন্তু দখল করেছি ৪ শতাংশ। উনি (বেলায়েত হোসেন) আমার বিরুদ্ধে পাথরঘাটা থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে সেখানে আমার কাগজপত্র দেখিয়েছি। কিন্তু উনি সেখানে কোনও কাগজ দেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনশনের বিষয়টি পুরোপুরি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমি সব কাগজ জেলা প্রশাসক ও পাথরঘাটা থানায় দিতে রাজি আছি। তারা বসে দেখুক। বেলায়েত হোসেন যদি কোনও জমি পান, তাহলে নিয়ে যাবে। আর আমি পেলে আমি নেবো।’

বেলায়েত হোসেনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ব্যানার ছিড়ে উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি বলেন, ‘আমি এরকম কোনও বিষয় জানি না।’

বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বেলায়েত হোসেনের অনশন ভাঙানো হয়েছে। তাকে কাগজপত্র আনতে বলা হয়েছে। উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’