‘অশনি’ থেকে বাঁচাতে আগাম ধান কাটছেন কৃষকেরা 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’-তে পরিণত হয়েছে। এ কারণে পটুয়াখালীর বোরো আবাদকারী কৃষকদের আগাম ধান কাটার নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। ৮০ শতাংশ ধান পেকেছে, এমন জমির ধান কাটার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এ অবস্থায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে অধিকাংশ জমির ধান এখনও ভালোভাবে পাকেনি, এতে অনেক কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছেন। 

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছর পটুয়াখালীতে ১৬ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় পটুয়াখালীর কৃষকরা বোরো আবাদের দিকে ঝুঁকছে এবং গত পাঁচ বছরে এ জেলায় বোরো আবাদ বেড়েছে ২৬ গুণ। ২০১৮ সালে মাত্র ৬৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. রহিম খান বলেন, এ বছর প্রায় ১৬ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এখন ধান কাটতে হচ্ছে। তবে আর দুই-এক সপ্তাহ পর কাটলে ভালো হতো।

গলাচিপার সুহরি ব্রিজ এলাকার কৃষক আল-আমিন বলেন, ‘এ বছর ছয় একর জমিতে বোরো আবাদ করেছি। খেতের ধান এখনও কাঁচা। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আগে ধান ঘরে তুলতে না পারলে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

সদর উপজেলার বহালগাছিয়া গ্রামের মো. মোতালেব ছয় একর জমিতে বোরো চাষ করেছেন। তার কয়েকটি জমির ধান পেকেছে। তাই ধান কাটা শুরু করেছেন। দ্রুত ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। 

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর পটুয়াখালী জেলার আট উপজেলায় বোরো চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে। এতে ৮৪ হাজার ৫১২ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের কৃষকরা জানুয়ারিতে পুনরায় বীজতলা তৈরি করেন এবং ফেব্রুয়ারিতে ধান রোপণ করেন। মে মাসের শেষের দিকে কৃষকরা পাকা ধান সংগ্রহ করেন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় আগেভাগেই কৃষকদের ধান কাটার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ 

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে বোরো চাষিদের ধান কাটার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৮০ শতাংশ ধান পেকেছে, এমন বোরো জমির ধান কেটে ঘরে তোলার নিদের্শনা দিয়ে এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।’