শৌচাগারের পাইপে নবজাতকের ৪৭ মিনিট বেঁচে থাকা ‘অলৌকিক’ 

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের শৌচাগারে প্রসবের পর ৪৭ মিনিট পাইপের মধ্যে থেকেও জীবিত উদ্ধার হয় এক নবজাতক। বিষয়টিকে ‘অলৌকিক’ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে এ ঘটনায় প্রসূতি বিভাগের কোনও নার্স কিংবা কর্মচারীদের দোষারোপ করা হয়নি। দীর্ঘ ৮ দিনের তদন্ত শেষে সোমবার (১৬ মে) দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, মায়ের প্রসব যন্ত্রণার মধ্যে মলত্যাগের বেগ পেলে তিনি শৌচাগারে যান। সেখানে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করলে বাচ্চা প্রসব হলেও বিষয়টি মা টের পাননি। পরবর্তীতে বুঝতে পেরে তিনি চিৎকার করেন।  

তিনি আরও বলেন, শৌচাগারের প্যানের সঙ্গে পাইপ সরাসরি যুক্ত হওয়ায় নবজাতক কোনও আঘাত পায়নি। সে প্যানের ভেতর পড়ে পাইপের মধ্যে চলে যায়। তাছাড়া বাচ্চাটির ওজন এক কেজি ৩০০ গ্রাম এবং আকারেও স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট থাকায় আঘাত লাগেনি।

তদন্ত কমিটির প্রধান হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. মুজিবুর রহমান তালুকদার বলেন, গর্ভবতী মা শৌচাগারে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করলে গর্ভপাত হয়ে কন্যা শিশুটি পাইপের মধ্যে চলে যায়। খবর পেয়ে প্রসূতি বিভাগে দায়িত্বরত কর্মী ও নবজাতকের পিতা পাইপ ভেঙে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। তবে নবজাতকের শরীরে সামান্যতম আঘাত লাগেনি বা রক্তপাত হয়নি। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসেও কোনও ঘাটতি দেখা যায়নি। বিষয়টিকে আমরা ‘অলৌকিক ঘটনা’ হিসেবে দেখছি। সেভাবেই আমরা প্রতিবেদন দিয়েছি।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, বাচ্চাটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের বিষয়টিকে অলৌকিক বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

পরিচালক আরও জানান, প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে মা শিল্পী বেগমকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। সে এখন শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন তার শিশুর কাছে রয়েছেন। শিশুটির অবস্থা ভালো আছে, শিগগিরই তাকে রিলিজ দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ৭ মে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের শৌচাগারে বাচ্চা প্রসব করেন পিরোজপুরের নেছারাবাদ এলাকার জেলে নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী শিল্পী বেগম। বাচ্চাটি শৌচাগারের পাইপে চলে গেলে শিশুটির পিতা পাইপ ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় পরের দিনই ৮ মে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।