উত্তাল বঙ্গোপসাগরে এক জেলার ৪৫৭ জেলে নিখোঁজ

গত কয়েকদিনে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ছয়টি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। ডুবে যাওয়া ছয় ট্রলারের ১০৭ জেলে মধ্যে ৭৫ জনকে উদ্ধার কয়রা গেলেও ৩২ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। একইসঙ্গে ২৫টি ট্রলার ও সেখানে থাকা ৪২৫ জেলের খোঁজও মিলছে না। এতে মোট ৪৫৭ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দিকে নিখোঁজ ট্রলারের মালিকদের বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে উদ্ধার হওয়া জেলেদের স্থানীয় বিভিন্ন ট্রলারের মাধ্যমে তীরে নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলো হলো- বরগুনা সদর উপজেলার নলী গ্রামের এফবি শানু মুসল্লি, একই গ্রামের এফবি জুনায়েদ, সদর উপজেলার নিশানবাড়িয়া গ্রামের এফবি আল মাহাদি, পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী এলাকার এফবি ভাই ভাই, পাথরঘাটা খলিফার হাট এলাকার এফবি মনোয়ারা ও চরদুয়ানী এলাকার এফবি মা।

নিখোঁজ ট্রলারগুলো হলো- পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের এফবি সেরাজুল, চরদুয়ানীর এফবি ভাই ভাই, এফবি শানু, বরগুনা সদর উপজেলার নলী গ্রামের এফবি বড় কালাম, এফবি ছোট কালাম, এফবি জাহাঙ্গীর, এফবি মোহাম্মাদ আলী ও পাথরঘাটার কাকচিড়া ইউনিয়নের এফবি মায়ের দোয়াসহ ২৫ ট্রলার। প্রত্যেকটি ট্রলারে ১৭ জন করে জেলে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম মিয়া বলেন, ‘কয়েকদিন আগে একটি নিন্মচাপ শেষ হয়েছে। এরপরই উপকূলের জেলেরা তাদের ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে রওনা দেন। আবারও নিম্নচাপ শুরু হলে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে এই পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত বরগুনার বিভিন্ন উপজেলা ও মহিপুরের ছয় ট্রলার ডুবি ও ২৫টি নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’

তিনি জানান, ট্রলার ডুবির খবর পাবার সঙ্গে সঙ্গেই কোস্টগার্ডসহ সরকারি সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও জেলেদের সন্ধানে বেশ কয়েকটি ট্রলার উদ্ধার অভিযানে কাজ করে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিখোঁজ ট্রলারগুলো সমুদ্রে ডুবে যেতে পারে।

এ বিষয়ে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কে এম সাফিউল কিঞ্জল বলেন, ‘গত দুদিন ধরে নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় অনেক ট্রলারডুবি ও নিখোঁজের ঘটনা শুনেছি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে পাথরঘাটা, হাতিয়া, চরফ্যাশন, নিজামপুর, পায়রা বন্দরসহ মোট ছয়টি টিম গভীর সমুদ্রে জেলেদের উদ্ধার অভিযানে রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রলার মালিক সমিতি থেকে বলা হয়েছে ৩১টি ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। ট্রলারের নাম সংগ্রহের কাজ করছি। আমাদের কাছে নাম আসছে। তবে এখন পর্যন্ত মোট ১৮২ জন নিখোঁজ জেলের সংখ্যা আমাদের হাতে এসেছে। নিখোঁজ ট্রলারের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’