ইয়াবার ভিডিওটি সুপার এডিটেড, দাবি বেতাগী ছাত্রলীগ সভাপতির

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ইয়াবা সেবনের ভিডিওটি সুপার এডিট করা বলে দাবি করেছেন বরগুনার বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বি এম আদনান খালিদ মিথুন। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে তার ইয়াবা সেবনের একটি ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়ালে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এটিকে ভুয়া বলে দাবি করেন। এর আগে মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে নিজেই বলেছিলেন, ‘এটি ৫/৬ বছর আগে শীতের সময় তোলা ছবি। কয়েকজন বন্ধুবান্ধব মিলে কিউরিসিটির জায়গা থেকে সেবন (ইয়াবা) করেছিলাম। আমি এখন কোনও মাদকদ্রব্য সেবন করি না’।

লিখিত বক্তব্যে বি এম আদনান খালিদ বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে এই ষড়যন্ত্র করেছে। যে ছবিগুলো ছড়িয়েছে তা সুপার এডিট  করা। আমার স্থির চিত্রগুলো ভিডিও রূপান্তরিত করা হয়। আমি কখনও মাদক সেবন করিনি। আপনারা চাইলে আমি ডোপ টেস্ট করাতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে এমন গুজব রটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে মামলা করবো। এডিট করা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় নিন্দা জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেতাগী উপজেলা বুড়ামজুমদার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল হোসেন ইমন, কাজিরাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমিন, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মারুফ মিরাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা দাবি করেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আদনান খালিদ মিথুন শুধু মাদকসেবীই না তিনি এর ব্যবসায়ও জড়িত। সভাপতি পদের প্রভাব খাটিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। নতুন কেউ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসুক তিনি তা চান না। তাই সে দীর্ঘদিন ধরে সভাপতির পদ দখল করে আছেন। কমিটি হয়েছে পাঁচ বছর অতিক্রম করলেও এখন পর্যন্ত সম্মেলন হতে দিচ্ছে না। এতে করে নতুন নেতৃত্ব আসছে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিথুন বেতাগী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আলতাফ হোসেন বিশ্বাসের ছেলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তার বাবা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই মিথুনের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে উত্থান শুরু হয়। সবশেষ ২০১৭ সালে বেতাগী উপজেলা ছাত্রলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে মিথুন সভাপতি নির্বাচিত হন। এই কমিটি পাঁচ বছর ধরে আছে।

তবে মঙ্গলবার ভিডিওটি নিজে বলে স্বীকার করলেও আজ বলছেন ভিন্ন কথা। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ‘ঘটনার আকস্মিকতায় আমি কী বলেছি ঠিক মনে নেই। তবে আমি ভেবেছিলাম, আমাদের একটা ফান ভিডিও আছে আপনি সেটার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। তাই আমি বলেছি, ওইটা আমার ভিডিও।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমি কখনও মাদক সেবন করিনি। প্রয়োজনে আমি ডোপ টেস্ট করাতেও প্রস্তুত আছি। যদি আমার শরীরে মাদকের কোনও উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো।’