বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র দিতে গিয়ে নিহত বর, কাঁদছেন স্বজনরা

পারিবারিক আয়োজনে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি বউভাতের অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ঠিক হয় শোয়েব পালোয়ানের (২৬)। স্বজনদের সঙ্গে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে বাড়ি বাড়ি ছুটছিলেন শোয়েবও। উভয় পরিবারে বিরাজ করেছিল আনন্দ-উচ্ছ্বাস। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে গেছে সবার ছোটাছুটি। মুহূর্তেই উভয় পরিবারের আনন্দ রূপ নেয় বিষাদে।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার আগারপোল সংলগ্ন এলাকায় নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী শোয়েব নিহত হন। শোয়েব পালোয়ান সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চর ছিফলী গ্রামের মো. হারুন পালোয়ানের ছেলে। ঘটনার পর থেকে কাঁদছেন নিহতের স্বজনরা। এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে শোয়েব বিয়ে করেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি বউভাতের অনুষ্ঠানের দিন ঠিক হয়। উভয় পরিবারের লোকজন এরই মধ্যে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র বিতরণ প্রায় শেষ করেছেন।

শোয়েবের ভাগনে মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বন্ধুবান্ধবদের বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র দেওয়ার জন্য শনিবার সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন মামা। দুপুর ১২টার দিকে আগারপোল সংলগ্ন এলাকায় একটি নছিমন মামার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে আহত হন। মামাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. তাইয়েবুর রহমান বলেন, ‘শোয়েবের ডান পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া তার বুকের ওপর দিয়ে গাড়ির চাকা যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে।’

এদিকে, শোয়েবের মৃত্যুর সংবাদ শুনে সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন নববধূ ও তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন শোয়েবের মা ও নববধূ।

শোয়েবের বন্ধু আরিফুর রহমান বলেন বলেন, ‘বউভাতের অনুষ্ঠানের আগমুহূর্তে শোয়েবের মৃত্যু হৃদয়বিদারক। একটি সড়ক দুর্ঘটনা দুই পরিবারের আনন্দ বিষাদ করে দিলো। উৎসবের বদলে বাড়িতে চলছে মাতম।’

সদর মডেল থানার ওসি মো. শাহীন ফকির বলেন, ‌‘পরিবারের অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে স্বজনদের।’