নারী দিবসে পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর বিচার দাবি স্ত্রীর

যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায় এবং ভরণপোষণ না দেওয়ায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিচার চেয়েছেন স্ত্রী। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বুধবার (৮ মার্চ) সকালে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসেনের বাসায় অবস্থান নিয়ে বিচার দাবি করেন তিনি।

আওলাদ হোসেন ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে বরিশাল পুলিশ লাইনসে কর্মরত রয়েছেন। তার বাবা-মা ভোলা শহরের অফিসার পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিচার দাবি করেন তার স্ত্রী। এ অবস্থায় বাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় আওলাদের পরিবার। আওলাদের স্ত্রী মানিকগঞ্জের বাইচাইল গ্রামের বাসিন্দা। এতদিন বাইচাইল গ্রামে থাকলেও বুধবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে আসেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেওয়ায় সম্প্রতি আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ আদালতে মামলা করেন স্ত্রী। এ ঘটনায় আওলাদকে মুলাদী থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরিশাল পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

আওলাদের স্ত্রী জানিয়েছেন, মানিকগঞ্জের এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ছিলেন তিনি। ওই ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। এক বছর আগে ফেসবুকে আওলাদের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। এরই মধ্যে রাজধানীর একটি হোটেলে তাদের দেখা হয়। সেখানে গোপন ভিডিও ধারণের পর ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ের জন্য চাপ দেন। গত ৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আওলাদকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তার কাছ থেকে প্রায় সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নেন আওলাদ। 

তিনি আরও জানিয়েছেন, বিয়ের কয়েকদিন পরই যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন আওলাদ। বাধ্য হয়ে গত মাসে আওলাদের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ আদালতে যৌতুক এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা করায় তাকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না আওলাদ। বাধ্য হয়ে তার বাসায় অবস্থান নিয়ে বিচার চেয়েছেন তিনি।

আওলাদের স্ত্রী বলেন, ‘কোথাও ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। কয়েকদিন আগে বরিশালের অতিরিক্ত ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি। ওই দিন অসুস্থ হলে আমাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। এরপর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাই। আজ নারী দিবসে স্ত্রীর স্বীকৃতি ও বিচার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। আমি আসায় বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।’

এ বিষয়ে ধনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন বলেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন আওলাদ। সংসার করতে চাচ্ছেন না। এজন্য স্ত্রী বাসায় আসায় আওলাদের পরিবার ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মো. শাহীন ফকির বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে ওই নারী থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো আমরা।’