২০ দিন পর উৎপাদনে যাচ্ছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র

সংকট কাটিয়ে টানা ২০ দিন পর আবারও শুরু হচ্ছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। রবিবার (২৫ জুন) সকালে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বয়লার চালু করা হয়। তাই সকাল থেকে চুল্লি থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়া। বিকাল ৪টায় টারবাইনে কয়লা ভরা শেষ হবে। এরপর ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

এর আগে গত ৫ জুন কয়লা সংকটে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ডলার সংকটে কয়লা আমদানি না হওয়ায় গত ২৫ মে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫ জুন বন্ধ হয় দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন। এতে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে পুরো দেশ। নতুন করে কয়লা আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হলে ইন্দোনেশিয়া থেকে জাহাজে কয়লা উঠতে শুরু করে।

এরপর গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে নোঙর করে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি অ্যাথেনা। জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করে রবিবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এমভি অ্যাথেনা জাহাজটি প্রায় ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বন্দরের ইনার অ্যাংকরেজে এসে পৌঁছায়। জাহাজটি শুক্রবার বিকালে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে নিয়ে আসা হয়। পরে সন্ধ্যার আগে থেকেই জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড শুরু হয়।

শনিবার সকাল নাগাদ প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খালাস করা হয়। কয়লা আনলোডের মধ্য দিয়েই কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আবদুল হাসিব জানান, কয়লা সংকটের কারণে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি জাহাজ কয়লা নিয়ে পায়রা বন্দরে এসেছে এবং কয়লা খালাস করা হচ্ছে। এছাড়া বয়লার চালু করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে বিকাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে কয়লাবাহী জাহাজ আরও আসতে থাকলে দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন অন্তত ১৩ হাজার টন কয়লা পোড়াতে হয়। এতদিন যা ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করেছে কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে বাকিতে কয়লা এনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সচল রাখা হয়েছিল। বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সিএমসি নামের প্রতিষ্ঠানটি।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিকানায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমান ৫০ শতাংশ করে অংশীদারিত্ব রয়েছে।