প্রেমিকা নিয়ে পলাতক রাব্বি, কুপিয়ে হত্যা প্রতিবেশী রব হাওলাদারকে

বরিশালের মুলাদী উপজেলায় প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়েছেন রাব্বি হোসেন নামের এক যুবক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আব্দুর রব হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রেমিকার পক্ষের লোকজন। 

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের বাদামতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুর রব হাওলাদার (৬০) ওই ইউনিয়নের চরকমিশনার গ্রামের মৃত ধলু হাওলাদারের ছেলে। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বাবুগঞ্জ থানার এসআই মো. মনির হোসেন জানিয়েছেন, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে দুই মাস আগে চরকমিশনারের বাসিন্দা আমির সরদারের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান একই এলাকার যুবক রাব্বি হোসেন। এ ঘটনায় রাব্বির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন আমির সরদার। সেখানে রাব্বির বাবা হিসেবে আব্দুর রব হাওলাদারের নাম লেখা হয়। কিন্তু পুলিশ তদন্তে গিয়ে জানতে পারে রাব্বি ওই এলাকার অলিউদ্দিন চৌকিদারের ছেলে। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন আব্দুর রবের ছেলে আব্বাস হাওলাদার। কারণ দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আমির সরদারের পরিবারের সঙ্গে বিরোধ চলছে রবের পরিবারের। অভিযোগপত্রে রাব্বির বাবা হিসেবে রবের নাম উল্লেখ করার জেরে সোমবার বিকালে মীরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় আমিরের ছেলে মাহবুব সরদার ও তার ভাতিজা আহসান সরদারকে মারধর করেন আব্বাস। এর জের ধরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

আব্বাস হাওলাদার বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাবা অটোরিকশায় করে খাসেরহাট বাজারে যাচ্ছিলেন। বাদামতলা এলাকায় আমিরের সহযোগী কামাল সরদার, জামাল সরদার, মাহিদ সরদার, তোতা সরদার, আহসান সরদার, ইব্রাহিম সরদারসহ ৩০-৩৫ জন বাবার ওপর হামলা চালান। তারা বাবাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।’

মাহবুব সরদার ও আহসান সরদারকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্বাস বলেন, ‘সরদার পরিবারের মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে রাব্বি। তার বাবার স্থলে আমার বাবার নাম দেওয়া হয় অভিযোগপত্রে। পুলিশ তদন্তে গিয়ে আসল ঘটনা উদঘাটন করেছিল। এর জেরে রাব্বির স্বজনরা মাহবুব সরদার ও আহসানকে মারধর করেছিল। এখানে আমার কোনও হাত ছিল না। আমি তাদের মারধর করিনি।’

মুলাদী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মীরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হাওলাদার ও সরদার পরিবারের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগপত্রে নাম ভুল দেওয়ার জের ধরে সরদারের লোকজন রব হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’