ধর্ষণে অসুস্থ হয়ে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক পলাতক

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নের বড়ডালিমা মদিনাতুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্র (১২) ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মো. সেলিম গাজী (৪০) পলাতক রয়েছেন। 

গতকাল শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর মহাখালী জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ছাত্র মারা যায় বলে জানিয়েছে তার পরিবার। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম গাজী তাঁতেরকাঠী ইউনিয়নের বড়ডালিমা গ্রামের বাসিন্দা।

ছাত্রের বাবার অভিযোগ, সাত বছর আগে ওই মাদ্রাসায় সন্তানকে ভর্তি করেন। মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক হাফেজ সেলিম গাজী এক বছর ধরে তার সন্তানকে বিভিন্ন কৌশলে ধর্ষণ করেছেন। দুই সপ্তাহ আগে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি পরিবারকে জানানো হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে থেকে তাকে মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়। 

ছাত্রের বাবা আরও বলেন, ‘মৃত্যুর আগে আমার ছেলে জানিয়েছে, এক বছর ধরে প্রতিনিয়ত ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে ওই শিক্ষক। এতে পায়ুপথে ক্ষত তৈরি হয়। ওই শিক্ষক আমাদের কিছু না জানিয়ে ওষুধ কিনে দিতো। শেষে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, পায়ুপথের ক্যানসার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। ১২ দিন চিকিৎসাধীন ছিল সেখানে। শুক্রবার রাতে মারা যায়। ছেলে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই আমি।’  

এদিকে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মো. সেলিম গাজী পলাতক রয়েছেন। তার মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া গেছে।

সেলিম গাজীর বড় ভাই নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. হাবিব গাজী বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। সেলিম গাজী বাড়িতে নেই। কোথায় আছে, আমি জানি না।’ 

নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মহসীন বলেন, ‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’