ভালোবাসা দিবসে কুয়াকাটায় পর্যটকের মেলা

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে কয়েক হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। ভালোবাসার রঙে সমুদ্রের ঢেউয়ের ছন্দে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সৈকতের সব পয়েন্ট পর্যটকে পরিপূর্ণ দেখা গেছে।

১৪ ফেব্রুয়ারি পয়লা ফাল্গুন বসন্তের প্রথম দিন, একইদিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এরপর সাপ্তাহিক ছুটি। বসন্ত ও ভালোবাসার যুগপৎ এই উদযাপন ঘিরে কুয়াকাটার হোটেল-মোটেলগুলো নানা রঙে সাজানো হয়েছে। দিবস ও ছুটিতে ৫০ হাজার পর্যটক আসবেন বলে আশা ব্যবসায়ীদের। এরই মধ্যে দেড় শতাধিক হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে কুয়াকাটায় আসতে থাকেন পর্যটকরা। বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে। এতে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে। পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সমুদ্রসৈকত। হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও বিনোদনকেন্দ্রসহ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ভালোবাসা দিবস ও আগামী সপ্তাহে ২১ ফেব্রুয়ারির ছুটিতে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটবে।

বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সৈকতের সবগুলো পয়েন্ট পর্যটকে পরিপূর্ণ দেখা গেছে

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘কুয়াকাটায় অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত হোটেল-মোটেল আছে ৮০টির মতো। এর বাইরে আছে ৭০টির মতো। এসব হোটেল-মোটেলে সর্বোচ্চ ২৫ হাজারের মতো পর্যটক থাকতে পারেন। মঙ্গলবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত প্রায় সব হোটেল-মোটেলের সব কক্ষ বুকিং রয়েছে। চলতি মাসের ছুটিগুলোতে আরও বেশি পর্যটক আসবেন। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি আমরা।’

কুয়াকাটা ছাড়িয়ে সমুদ্রের ৩০ কিলোমিটার দূরে চর বিজয়ে ভিড় জমাচ্ছেন তরুণ-তরণীরা—এমনটি জানিয়েছেন কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি জানি আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সৈকতের দূরবর্তী স্থানে যেসব স্পট আছে, নৌপথে সেগুলোতে যেতে ইতোমধ্যে বোটের টিকিট অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন পর্যটকরা। এর মধ্যে চর বিজয়ে যেতে আগ্রহী বেশিরভাগ। বুধবার অনেকে এসেছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও কয়েক হাজার পর্যটক আসবেন। তাদের অনেকে বোটের টিকিট বুকিং দিয়েছেন।’ 

বুধবার সকাল থেকে কুয়াকাটায় আসতে থাকেন পর্যটকরা

সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসে পর্যটন ব্যবসায়ীদের ভালো ব্যবসা হবে বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (কুটুম) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির। তিনি বলেন, ‘শুধু ভালোবাসা দিবস নয়; ফাল্গুন, সরকারি ছুটি ও ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ৫০ হাজার পর্যটকের সমাগম হবে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল বুকিং হয়ে গেছে। আশা করছি, ভালো ব্যবসা হবে ব্যবসায়ীদের।’

পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকটি দল নিয়োজিত আছে জানিয়ে কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাহাত গাওহারি বলেন, ‘সবার নিরাপত্তা দিতে আমরা তৎপর আছি। সাগরের পানিতে গোসলে নেমে কেউ যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হন, সেজন্য তাদের সতর্ক করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের আলাদা দল তৎপর আছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। হোটেল-মোটেলের নিরাপত্তায় সিভিল টিম রাখা আছে। সৈকতজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’