ঋণের চাপে আত্মহত্যা: এনজিওর ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

পিরোজপুরের নেছারাবাদে ঋণ পরিশোধের চাপে এক নারীর ‘আত্মহত্যার’ ঘটনায় শনিবার মামলা করা হয়েছে। এতে ‘ডাক দিয়ে যাই’ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছয় কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার উত্তর-পশ্চিম সোহাগদল গ্রাম থেকে তাসলিমা বেগম (৫০) নামের ওই নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন ‘ডাক দিয়ে যাই’র ইন্দেরহাট শাখার ফিল্ড অফিসার সমির চন্দ্র ঘোষ, সাইফুর রহমান, আহাদ হোসেন, নির্বাহী পরিচালক মো. শাহজাহান গাজী, এরিয়া ম্যানেজার আসাদুজ্জামান মিলন ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজার দীপংকর শীল। আসামিদের প্ররোচনায় তাসলিমা আত্মহত্যা করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।  

মামলার বাদী তাসলিমার ছেলে মো. তামিমের দাবি, তার ছোট ভাই মিরাজ স্ত্রীর নামে ‘ডাক দিয়ে যাই’ এনজিওর ইন্দেরহাট শাখা থেকে ৪০ হাজার টাকার ঋণ নেয়। এতে তার মাকে সাক্ষী রাখা হয়। মিরাজ কয়েকটি কিস্তি পরিশোধের পর বাড়ি থেকে সটকে পড়ে। কিস্তিখেলাপি হওয়ায় এনজিওর লোকেরা বাড়িতে এসে মাকে চাপ দিচ্ছিলেন। ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় এনজিওর লোকজন বাড়িতে এসে মাকে নানা কথা বলেন। তাকে বলা হয়, ‘এ রকম কুলাঙ্গার ছেলে আপনি কেন জন্ম দিয়েছেন? আপনি মরেন না কেন? আপনি মরলেও আমরা বেঁচে যেতাম।’ তাদের এমন কথায় আমার মা রাতেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরদিন সকালে বাড়ির পাশে একটি বাগানে তার ঝুলন্ত লাশ পাই। ‘ডাক দিয়ে যাই’ এনজিওর লোকদের এমন কথায় মা আত্মহত্যা করেছেন।

তবে ডাক দিয়ে যাই এনজিওর পরিচালক তাজুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের ঋণগ্রহীতা কলি বেগম নামের এক গৃহবধূ অভিযোগকারী পরিবারের পুত্রবধূ। তারা ওই বাসায় থাকতেন। তাই আমার অফিসের লোক তাদের বাসায় গিয়ে কলির শাশুড়ি তাসলিমার কাছে কলি ও তার স্বামী মিরাজের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন মাত্র, আর কিছু নয়।’ 

নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘মামলার আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’