আদালত চত্বরে মারধরের শিকার সাবেক মেম্বার

পটুয়াখালীতে আদালতে জামিন নিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন মো. মনির মীর (৪৫) নামে সাবেক এক ইউপি সদস্য (মেম্বার)। গুরুতর আহত অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে গলাচিপা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। মনির গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২১ মে গলাচিপা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহিন শাহকে ১৫ হাজার ৫৪৯ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ওয়ানা মার্জিয়া নিতু। উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক নিতু এর আগে পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। এই নির্বাচনে নিতুর পক্ষে ভোট করেছেন মনির মীর। এ নিয়ে শাহিন শাহের সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধ চলছে। একপক্ষের অনুসারীরা আরেক পক্ষের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে মনিরের ওপর হামলা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন।

আহত মনির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মঙ্গলবার এইচএসসি পরীক্ষার হল থেকে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তার জামিনের জন্য বুধবার দুপুরে আদালত চত্বরে গেলে প্রতিপক্ষ শাহারুল ফকির, আবদুল্লাহ আল নোমান তুর্জ ও সিফাতসহ সাত-আট জন আমার ওপর হামলা চালান। তারা আমাকে পিটিয়ে জখম করেন। এ অবস্থায় দৌড়ে আদালতের ভেতরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গিয়ে জীবন রক্ষা করেছি। ম্যাজিস্ট্রেট চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে আবারও হামলার চেষ্টা করেন তারা। এর আমাকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।’  

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আমি মার্জিয়া নিতুর ভোট করেছি। এ নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান শাহিন শাহের লোকজন আমার নামে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে। মামলার পর থেকে বাড়িঘরে থাকতে পারছি না। রাস্তাঘাটে বের হলে শাহিনের লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়।’

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মনিরের শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি। তার চিকিৎসা চলছে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল নোমান তুর্জ বলেন, ‘অনেকদিন আগে শাহারুল ফকিরের বাড়ি গোলখালী এলাকায় দাওয়াতে গিয়েছিলাম। তখন শাহারুলের সঙ্গে মনিরদের মারামারি হয়েছিল। এজন্য আমার বাবা রাগারাগিও করেছেন। তবে বুধবারের ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শাহারুল এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। প্রথম ঘটনার পর থেকে শাহারুলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই।’

এ ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহিন শাহ বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে ঢাকায় এসেছি। এখনও ঢাকায় আছি। মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।’  

ঘটনার সার্বিক বিষয়ে জানতে বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়ানা মার্জিয়া নিতুর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদাউস আলম খান বলেন, ‘আদালত চত্বরে মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’