বরগুনার পাথরঘাটায় নাসির উদ্দিন (৩২) নামের যুবদলের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই এলাকার তিন জনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বেলা ২টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার বড় পাথরঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
নাসির উদ্দিন পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে। সে ওই ওয়ার্ডের যুবদল সদস্য ছিলেন। গোলাম রাব্বি নামের স্থানীয় এক তরুণের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, গোলাম রাব্বি সম্প্রতি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের স্থানীয় কর্মী।
হত্যাকাণ্ডের পর অভিযোগ ওঠা গোলাম রাব্বি (২০), তার সহযোগী হাসান গাজী (২৩) ও ইব্রাহিম হোসেনের (১৯) বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তিন জনই উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে শ্বশুরবাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ছোনবুনিয়ায় ফিরছিলেন নাসির উদ্দিন ওরফে কাটা নাসির। বড় পাথরঘাটা ঘুটাবাছা নূরীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এলাকায় পৌঁছালে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আনসার মোল্লা বলেন, দুপুরে বাড়ির সামনে চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি— নাসির উদ্দিন রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে গোলাম রাব্বি ও হাসান গাজীকে মোটরসাইকেলে করে দ্রুত চলে যেতে দেখেছি। গোলাম রাব্বির হাতে একটি রামদা ছিল। এর আগেও একাধিক মোটরসাইকেল দ্রুত চলে যেতে দেখা গেছে।
পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, সম্প্রতি যুবদলের নেতা নাসির উদ্দিনকে ৫ আগস্ট পরবর্তী নেতা বলে কটাক্ষ করেন হাসান গাজী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজ সকাল ৯টার দিকে সরকারি খাদ্য গুদামের সামনে হাসান গাজীকে চড়-থাপ্পড় দেন নাসির উদ্দিন। ওই ঘটনায় তাদের দুজনকে এনে ঘটনার ফায়সালা করে দিলেও হাসান গাজী সন্তুষ্ট হয়নি। এর জেরে নাসির উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হতে পারে।
পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুক ও পাথরঘাটা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দীন জানান, কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা এলাকার ছাত্রলীগের কর্মী গোলাম রাব্বির নেতৃত্বে তার সহযোগী হাসান গাজী, ইব্রাহিম হোসেনসহ পাঁচ-ছয় জন নাসির উদ্দিনের মোটরসাইকেল লাঠি দিয়ে গতিরোধ করেন। পরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরগুনা পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) মোহাম্মদ আবু ছালেহ।
পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল বলেন, ইতিমধ্যেই গোলাম রাব্বির বাবা মাহবুবুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার জড়িত অপর ব্যক্তিদেরও আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে।