২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) নির্বাচনের ফল বাতিল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণা করতে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে মামলাটি করেন সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। মামলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ছয় জনকে আসামি করা হয়। মামলার অপর আসামিরা হলেন- গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু, হরিণ প্রতীকের আলী গোসেন হাওলাদার, হাতি প্রতীকের আসাদুজ্জামান, লাঙল প্রতীকের ইকবাল হোসেন তাপস এবং টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী কামরুল আহসান।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে হামলা-মামলার মধ্যে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হয়। তারই একপর্যায়ে হাতপাখার প্রার্থীর ওপরে হামলা করে তাকে রক্তাক্ত করা হয়। সব বুথ থেকে হাতপাখার এজেন্টদের মারধোর করে বের করে দেওয়া হয়। সারাদিন আতঙ্ক সৃষ্টি করে জালিয়াতি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট দেখিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীকে ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট দেখিয়ে দ্বিতীয় দেখানো হয়। প্রকৃতপক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে জনতা ভোট দিতে পারলে হাতপাখার প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হতো। জনতার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ জালিয়াতির প্রতিকার চেয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা ২০২১-এর-৯১ বিধির অধীনে আবুল খায়েরের ফল বাতিল করে প্রকৃত বিজয়ীকে জয়ী ঘোষণার আরজি জানানো হয় মামলার আবেদনে।
মামলার আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালত আমাদের আর্জি শুনেছেন। আমরা আদালতকে জানিয়েছি, নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম জয়ী হলেও তাকে পরাজিত ঘোষণা করে স্বৈরাচার সরকার। স্বৈরাচারের লোকজন তাকে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিহত করেছে। তার ওপর হামলা হয়েছে। এসব বিষয়ে প্রতিকার চাইলেও তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, তিনি তো (ফয়জুল করীম) ইন্তেকাল করেন নাই। এ ইন্তেকাল কমিশন হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীকে পরিকল্পিতভাবে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের হয়ে পরাজিত ঘোষণা করে। তখন আইনি ব্যবস্থা এমন ছিল যে আমরা চাইলেও কোথাও প্রতিকার পাইনি। ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’