নাসিরনগরে হামলা: ট্রাক ভাড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান আঁখি

দেওয়ান আতিকুর রহমান আাঁখি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আাঁখি স্বীকার করেছেন, ওই দিন ট্রাক ভাড়ার টাকা দিয়েছিলেন তিনি। তবে তিনি দাবি করেন, বাধ্য হয়েই ট্রাক ভাড়া পরিশোধ করতে হয়েছে তাকে।

গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে তিনি নাসিরনগরে হামলার ঘটনার কয়েকজন উসকানিদাতার নামও বলেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. মফিজ উদ্দিন আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকার ভাটারা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই তাকে নাসিরনগর থানায় আনা হলে মন্দির ভাঙচুরের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। শুক্রবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিনের আদালত জামিন বিষয়ে শুনানির দিন রবিবার ধার্য্য করেন।

ওসি মো. মফিজ উদ্দিন জানান, গ্রেফতারের পর চেয়ারম্যান আঁখিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, এক প্রকার বাধ্য হয়েই ট্রাক ভাড়া হিসেবে তিন হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কেননা, প্রতিবাদের সমাবেশে অংশ না নিলে তিনি নাস্তিক গণ্য হবেন বলে হুমকি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে যারা চাপ প্রয়োগ করেছিল তাদের নামও তিনি প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘যাচাই-বাছাই করে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

উল্লেখ্য, নাসিরনগরে ৩০ অক্টোবরের হামলায় আতিকুর রহমান ১৪-১৫টি ট্রাকে করে লোক পাঠান বলে অভিযোগ উঠে। একাধিক ব্যক্তির জবানবন্দিতেও তার নাম উঠে আসে। এ অবস্থায় পুলিশ তাকে নজরদারিতে রাখে।

উল্লেখ্য গত ২৯ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর গ্রামের রসরাজ দাসের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনার পরের দিন ৩০ অক্টোবর  নাসিরনগর উপজেলা সদরে আহলে সুন্নাতুল জামাত এবং খাঁটি আহলে সুন্নাতুল জামাতের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি সমাবেশ আহ্বান করা হয়। এই সমাবেশ থেকে সকাল ১০টার দিকে একদল লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পাড়া মহল্লায় হামলা চালায়।পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কাজল দত্ত এবং নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। এসব মামলায় অজ্ঞাত ১২শ’ জনকে আসামি করা হয়।

তবে গত ৩০ অক্টোবর হামলা, ভাঙচুরের পর আরও চার দফায় সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।

তবে যে সাইবার ক্যাফে থেকে বিতর্কিত ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা হয় তার মালিককে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন- 


সুন্দরগঞ্জের সব রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডেই জামায়াত জড়িত!

/এফএস/