প্রস্তুত কক্সবাজার, পর্যটক নিয়ে সংশয়ে ব্যবসায়ীরা

পর্যটক বরণে প্রস্তুত কক্সবাজারপ্রতি বছর ঈদের ছুটি মানেই কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল। ঈদের পরে দিন থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক। নগর জীবনের যান্ত্রিকতা থেকে দূরে সাগর পাড়ের বালিয়াড়িতে আনন্দে মেতে ওঠেন ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা। কিন্তু এবার কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের দেখা পাবেন কিনা এ নিয়ে সংশয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তারপরও পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আর পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। পর্যটক হয়রানি বন্ধে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও  নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সহ সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, ‘এই বছর ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কক্সবাজার। এছাড়া সম্প্রতি রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড় ধসে প্রায় ২ শতাধিক লোক নিহত হয়েছে। তাই এর প্রভাব কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের ওপর পড়েছে। এ কারণে এ বছর পর্যটক আসবে কিনা সংশয় রয়েছে।’

কক্সবাজার-৩কক্সবাজার হোটেল লং বিচ’র হেড অব অপারেশন মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে প্রচুর পর্যটক কক্সবাজারে আসেন। কিন্তু, এ বছর আশানুরূপ পর্যটক আসবে কিনা সন্দিহান। কারণ, ঘূর্ণিঝড়সহ নানা কারণে এই বছর হোটেলের বুকিংয়ে তেমন সাড়া পড়েনি। এ কারণে আমরা খুবই উৎকণ্ঠায়।’

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল হাসান বলেন, কক্সবাজারে প্রায় সাড়ে ৪শ’ আবাসিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। এছাড়া সৈকত কেন্দ্রিক কিটকট, দোকান, মার্কেট, রেস্তোঁরাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান রয়েছে সহস্রাধিক। এসবের সঙ্গে কর্মরত প্রায় অর্ধ-লাখেরও বেশি ব্যবসায়ী, শ্রমিক-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। আর কক্সবাজারে আশানুরুপ পর্যটক না আসলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

কক্সবাজারকক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে রাব্বি জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কক্সবাজারে নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এই বছর ঈদে আগত পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। আর পর্যটকরা যাতে কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য থাকবে প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থা।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলার প্রত্যেকটি পর্যটন স্পটে স্ট্যাইকিং ফোর্সসহ অতিরিক্ত টহল পুলিশ থাকবে। থাকবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।

কক্সবাজার-১‘কক্সবাজার বিচ ম্যানেজম্যান কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, কক্সবাজারে হোটেল মোটেল জোনে যে সমস্ত পর্যটক আসে, তাদের জন্য সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী ও হোটেল মালিকদের সঙ্গে সভা করে থাকি। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা থাকে। পাশাপাশি সেখানে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আশা করা হচ্ছে এবারে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে না। পর্যাপ্ত নিরাপত্তায় পর্যটকরা স্বাচ্ছ্যন্দে ঘোরাফেরা করতে পারবে।

/বিএল/