‘পাহাড়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে’

01রাঙামাটি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেছেন,‘ পার্বত্য এলাকায় শান্তি প্রক্রিয়া ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে। এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এখানে দেশি-বেদেশি ষড়যন্ত্র চলছে।’ রবিবার (২০ মে) সকালে ‘জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল ও চুক্তিবিরোধী সব কার্যক্রম প্রতিহত করুন’ এই স্লোগানে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটিতে ছাত্র জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
পাহাড়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে না অভিযোগ করে ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হোক, চাঁদাবাজি বন্ধ হোক, তা আমরাও চাই, তবে তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে হতে হবে। কিন্তু আমি স্থানীয় একজন সংসদ সদস্য হয়েও আমাকে যৌথবাহিনীর অভিযানের বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদকেও এ বিষয়ে কোনও কিছু বলা হচ্ছে না।’
ঊষাতন তালুকদার আরও বলেন, গত ৩মে নানিয়ারচরে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হয়েছে। এটার পক্ষে আমরা নই এবং পরের দিনের ঘটনা সেটার জন্যও আমি নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বরাবরই বলে আসছি, আমরা সন্ত্রাস, অস্ত্রবাজি চাই না। আমাদের নেতা সন্তু লারমা অত্র এলাকায় সবসময় শান্তি চায়। কিন্তু হঠাৎ করে কীভাবে শক্তিমান, বর্মা মারা গেলো, ঘটনা কী? আলামত কি? এটা আসলে একটা খেলা। এই খেলাতে আমরা মরে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনুন। সাধারণ মানুষ কেন আতঙ্কে থাকবে। আজ পাহাড়ে শুধু পাহাড়িরা নয়, বাঙালিরাও আতঙ্কিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা সন্তু লারমাসহ আমরা যখন চুক্তি করেছিলাম সব অস্ত্র, গোলাবারুদ জমা দেব তখন তিনি অত্যন্ত উদ্ধিগ্ন ছিলেন। এই গোলবারুদ, অস্ত্র নিয়ে মানুষ সবাই যাবে কিনা না নাকি কেউ থেকে যাবে। সব ধরনের অস্ত্র, গোলা বারুদ আমরা নিয়ে এসেছিলাম। একটিও লুকিয়ে রাখিনি। কেউ কেউ আমাদের দোষারপ করে কিন্তু আমরা কোনও কিছু রেখে আসিনি তখন। উনি (সন্তু লারমা) খুব আন্তরিকভাবে সদিচ্ছা নিয়ে, এখানে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার জন্য এসেছেন। নতুন করে অস্ত্র ধরার জন্য আসেননি।’
পিসিপি’র সভাপতি জুয়েল চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও জনসংহতি সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দীন মাহিম, সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রনেতা নজরুল কবীর, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক বাপ্পাদীপ্ত বসু, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ফারুক আহমেদ রুবেলসহ অনেকে।