গত রবিবার (১০ জুন) সকাল থেকে ভারী বর্ষণ আর ঝড়ো হাওয়ায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ ভেঙে পড়ে। পরে প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তা সরিয়ে নেয়। সকাল থেকে ভারী বর্ষণ না থাকলেও লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পৌর এলাকায় ৬০৯টি পরিবার এবং জেলায় ৩ হাজার ৩৭টি পরিবার পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাস করছে।
শহরের রূপনগর এলাকার বাসিন্দা আবুল মিয়া জানান, বৃষ্টি দেখলে ভয় করে, গত বছরের কথা মনে পড়ে যায়। বৃষ্টির কারণে সারারাত কেউ ঘুমাইনি।
জালাল মিয়া জানান, আবারও যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এতে তাদের ভেতরে ভয় কাজ করছে। রাতে ভয়, আতঙ্কে ঘুম আসে না। তবুও জীবনের ভয় নিয়ে তাদের বসাবাস করতে হচ্ছে। নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে তারা কোথাও যেতে চান না।
দক্ষিণ মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা আজগর আলী। তার ছেলেও মারা গেছে গেল বছর পাহাড়চাপা পড়ে। কিন্তু এখনও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে পুরনো স্থানে ঘর করে থাকছেন তিনি।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বার বার মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন রূপনগরে ৩০টি তাবু টাঙিয়ে দিয়েছে। যারা ঝুঁকিতে বসবাস করছেন, তাদের দ্রুত সময়ে এসব তাবুতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বসতকারীদের নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া, ওইসব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় সভা করেছি। ইতোমধ্যে পুরো জেলায় মোট ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গেলো বছর প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে রাঙামাটিতেই চারজন সেনা সদস্যসহ ১২০ জন মারা যান। এতে আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। ব্যাপক ক্ষতি হয় পুরো জেলায়। তিন মাস আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রায় তিন হাজার মানুষ।