১৪ ডিসেম্বর বান্দরবান মুক্ত দিবস

বান্দরবান১৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বান্দরবান মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বান্দরবান পাক-হানাদার মুক্ত হয়। বান্দরবানে পাহাড়ী জনপদ ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় এখানে বড় ধরনের কোনও যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। তবে রাজাকার, পাক-হানাদার বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি পাহাড়ী ও বাঙালিরা। একাত্তরে এখানকার অনেক দামাল ছেলেরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, বান্দরবানের কালাঘাটা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও সদরের নিউগুলশান, ডলু পাড়া, ক্যানাই জ্যু পাড়াকে মুক্তিযুদ্ধের ঘাটি হিসেবে ব্যবহার করা হত। সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হলেও বান্দরবানে এখন অনেক রাজাকার রয়েছে। বর্তমানে বান্দরবানের পাক-বাহিনীর দোষররা এতই প্রভাবশালী যে, মামলা করাতো দূরের কথা, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না কেউ।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) তারু মিয়া বলেন, ‘আমি একটি স্বাধীন দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। দেশ এগিয়ে চলছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালে আমরা আবার কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম। মনের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। আমরাতো রাজাকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। এভাবে চলতে চলতে যখন বর্তমান সরকার আসলো, আমরা আশার আলো দেখলাম। এর আগে আমাদেরতো কোনও মূল্যই ছিল না। কথায় কথায় আমাদের বলা হত আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। অথচ আমাদের ভাতা দেওয়া হত মাত্র দুইশ টাকা। আজকে আমরা খুশি। এখন আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের যে ভাতা দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে একটি সংসার ভালভাবে চলতে পারে। বর্তমানে আমি সুখি।’

এদিকে, বান্দরবান সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফিকুর রহমান বলেন, ‘এখানে বড় কোনও যুদ্ধের ইতিহাস না থাকলেও, কালাঘাটা, ডলুপাড়া, ক্যানাই জ্যু পাড়াসহ কয়েকটি স্থানে পাক হানাদার বাহিনী হামলা চালায়। ১৩ই ডিসেম্বর পাক-হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যখন আমাদের গোলাগুলি হয়, তখন তারা এখানে থাকতে না পেরে পিঁছু হটতে বাধ্য হয়। একপর্যায়ে তারা বান্দরবান ত্যাগ করে। এভাবে ১৪ই ডিসেম্বর বান্দরবান মুক্ত হয়।’