চট্টগ্রামে খালাতো ভাইকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

 অপহৃত কিশোরকে উদ্ধারের পর সংবাদ সম্মেলন করছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর) এস এম মোস্তাইন হোসেন

চট্টগ্রামে আপন খালাতো ভাইকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে এক যুবককে আটক এবং অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর) এস এম মোস্তাইন হোসেন রবিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব কথা জানান।

তিনি আরও জানান, সাতকানিয়া উপজেলার করাইয়ানগর এলাকার ফৌজুল কবীরের ছেলে মো. সাদেক ছোবহান সাকিবকে (১৭) অপহরণ করে তারই খালাতো ভাই মো. জাহাঙ্গীর আলম। এ ঘটনায় জড়িত মোহাম্মদ হোসেন নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এস এম মোস্তাইন হোসেন বলেন, ‘মূল পরিকল্পনাকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম জয় (২৮) আরও ৪/৫ জনের যোগসাজশে গত ১০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিজিসি ট্রাস্ট কলেজে যাওয়ার পথে ঠাকুরদিঘি মেইন রোড এলাকা থেকে ভিকটিম সাকিবকে অপহরণ করে। পরে ভিকটিমের বাবার কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে সাকিবকে হত্যার হুমকি দেয়।’

আটক অপহরণকারী

তিনি আরও বলেন,‘ভিকটিমের পরিবার এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানায় জিডি করে এবং বিষয়টি নগর গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়। পরে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মঈনুল ইসলামের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম লোহাগাড়া থানাধীন বটতলী এম কে শপিং সেন্টারের তৃতীয় তলার এম কে বোর্ডিং আবাসিক হোটেলের ৩০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোহাম্মদ হোসেন নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মূল আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা যায়নি। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

এসএম মোস্তাইন হোসেন আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মোহাম্মদ হোসেন জানিয়েছে, পুলিশ যদি আর ২০ মিনিট পরে যেতো তাহলে তারা সাকিবকে আর জীবিত পেতো না। ২০ মিনিট পরেই তাকে গলা কেটে হত্যা করা হতো। অপহরণকারী পরিচিত হওয়ায় জেনে যাওয়ার ভয়ে তাকে হত্যা করা হতো।’

সাকিবের মামা আবুল হোসেন নান্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘প্রতিদিনের মতো সাকিব বিজিসি ট্রাস্ট কলেজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে ঠাকুরদিঘি মেইন রোড এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় গাড়ি নিয়ে জাহাঙ্গীর ওই সড়ক হয়ে যাওয়ার পথে কলেজে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে সাকিবকে তার গাড়িতে তোলে। পরে পদুয়া হাসপাতালে কাজ আছে বলে সে গাড়ি ঘুরিয়ে লোহাগাড়ার দিকে চলে যায়। পরে গাড়িতে তাকে অজ্ঞান করে ফেলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপহরণকারী জাহাঙ্গীর এবং অপহৃত সাকিব দুজনই আমার ভাগিনা। শুধু টাকার জন্য জাহাঙ্গীর সাকিবকে অপহরণ করেছে। সাকিবের বাবা সহজ সরল মানুষ। ব্যবসা করে, তাই তার কাছে ভালো টাকা পয়সা আছে এটা জাহাঙ্গীর জানতো। ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাইলে তিনি দিতে পারবেন। সম্ভবত এ কারণেই সে সাকিবকে অপহরণ করেছে।’