হাতিয়া থেকে নিখোঁজের ৪ মাস পর চট্টগ্রাম থেকে কিশোরীকে উদ্ধার

নোয়াখালীনোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের চর নঙ্গোলিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজের প্রায় চার মাস পর মুমূর্ষু অবস্থায় রাহেনা আক্তার (১৪) নামের এক কিশোরীকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচ থেকে তাকে উদ্ধারের পর, বিকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সুমন ও সাহাবুদ্দিন নামে দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শহরের মাইজদী থেকে তাদের আটক করা হয়।

উদ্ধার হওয়া রাহেনা আক্তার চর নঙ্গেলিয়া গ্রামের এনায়েত উল্যার মেয়ে।

রাহেনা আক্তারের মা সামছুন নাহার অভিযোগ করেন, প্রায় চার মাস আগে তার বাড়ির বাহিরে থাকার সুযোগে প্রতিবেশী জামাল উদ্দিন প্রকাশের মেয়ে রিনা আক্তার বাড়িতে এসে নেশা দ্রব্য খাইয়ে রাহেনাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে বাড়িতে এসে রাহেনাকে না পেয়ে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেন তিনি কিন্তু পান না।

সামছুন নাহার বলেন, ‘নিখোঁজের কয়েকদিন পর রাহেনা একটি অপরিচিত নম্বার থেকে তাকে কল দিয়ে বলে ‘মা আমি রাহেনা’ একথা বলার পরই কল কেটে যায়। এরপর থেকে আমরা রাহেনার আর কোনও সন্ধান পায়নি। রবিবার (৩ ফেব্রুযারি) গভীর রাতে পুনরায় একটি অপরিচিত নম্বার থেকে তার কাছে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি কল দিয়ে রাহেনার বিষয়টি জানালে, রাতে তারা চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাহেনা বলেন, ‘গত চার মাস রিনা মামী আলেয়া আক্তার তার মাইজদীর বাসায় রেখে আমাকে মারধর করেছে। কখনও ব্লেড দিয়ে শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে, কখনও গরম পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে গায়ে, কখনওবা শরীর এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার রাতে একটি গাড়িতে করে তাকে কালুরঘাট ব্রিজের কাছে নিয়ে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়ে বলে তুই মর।’

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম জানান, ভিকটিম ও পরিবারের তথ্যমতে, তার শরীরে এসিড বা কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত রয়েছে। তাই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা বা কুমিল্লায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি হাসপাতালে গিয়ে রাহেনাকে দেখে এসেছেন। প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে সুমন ও সাহাবুদ্দিন নামে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।