রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যালিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতবাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদা নিয়ে স্বদেশে ফিরে যাক; তাহলে রাখাইনে তাদের বসবাস শান্তিপূর্ণ হবে।’

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এত বিপুল জনগোষ্ঠী একসঙ্গে অবস্থান করায় স্থানীয়রা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কোনও বিকল্প নেই।’ এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে সকালে ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন রবার্ট মিলার। পরে দুপুর ১২টার দিকে শরণার্থী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালিতে অংশ নেন তিনি। এ সময় একদল রোহিঙ্গার বিক্ষোভের মুখে পড়েন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। র‌্যালিটি মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কুতুপালং রেজি. ক্যাম্পে আসার পথে—‘আমরা শরণার্থী জীবন যাপন করতে চাই না, স্বদেশে ফিরতে চাই’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন রোহিঙ্গারা। তারা র‌্যালিটি আটকে দেন। প্রায় আধাঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের শান্ত করেন। পরে রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কুতুপালং ক্যাম্পে বৈঠকে বসেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সেখানে রোহিঙ্গারা তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরলে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাদের আশ্বস্ত করেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে অংশ নেওয়া কুতুপালং রেজি. ক্যাম্পের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি মো. ইউনুচ আরমান বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত আমাদের বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আমেরিকা সরকার সাত বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা দিয়েছে, এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে আমি বলেছি, আমাদের সহযোগিতার দরকার নেই। আমাদের দেওয়া মার্কিন ডলার বিভিন্ন এনজিও নানাভাবে খরচ করছে। সব সাহায্য রোহিঙ্গাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে না। এই মুহূর্তে চীন সরকারের মাধ্যমে মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে আমাদের স্বদেশে পাঠানো হোক। আমরা এই দেশে থাকতে আসেনি। বাংলাদেশ সরকার আমাদের জায়গা দেওয়ায় আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।’

এ সময় ইউএনএইচসিআর’র বাংলাদেশের প্রধান স্টিফেন করলিস, কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালামসহ সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।