হাটহাজারীতে মন্দিরের নিরাপত্তায় মাদ্রাসাছাত্ররা

ছবি: সংগৃহীতভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ-এলাকাবাসীর সংঘর্ষে চার জন নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ চলাকালে সনাতন ধর্মের একটি মন্দিরের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেছেন হাটহাজারী কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২০ অক্টোবর) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে হাটহাজারীতে বিক্ষোভ শুরু করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এ সময় উত্তেজিত ছাত্ররা পাশের সীতাকালী কেন্দ্রীয় মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের চেষ্টা করলে মাদ্রাসার অন্য শিক্ষার্থীরা তাদের রুখে দেন। এছাড়া মন্দিরে যাতে হামলা করতে না পারে, এজন্য তারা মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা দেন।

এদিকে মন্দিরের নিরাপত্তা দেওয়ায় মাদ্রাসাছাত্রদের প্রশংসা করেছেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য শ্যামল নাথ। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভের সময় কিছু লোক মন্দিরের দিকে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। কয়েকজন মন্দির ভাঙচুরের চেষ্টাও চালিয়েছিল। কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা তাদের রুখে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রী শ্রী সীতাকালী মন্দির এবং মাদ্রাসার বড় মসজিদটি পাশাপাশি। এটি শুধু হাটহাজারী নয়, সারা বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য নিদর্শন। শত বছর ধরে দুই ধর্মের দুটি উপসনালয় পাশাপাশি থাকলেও কখনও বড় ধরনের কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি।’
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাটাহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মন্দিরটি প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো। আমাদের মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রায় ১২০ বছর আগে। বিগত সময়ে কখনও মন্দির নিয়ে সনাতন সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা হয়নি। মন্দিরটি আমাদের মসজিদের দেয়ালঘেঁষা, তারপরও সেখানে পূজা অর্চনা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে সমস্যায় পড়তে হয়নি। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে আমাদের ছাত্ররা সবসময় মন্দির পাহারা দেন। গতকালও তারা মন্দিরে পাহারা দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসলাম কখনও অন্য ধর্মের উপাসনালয়ে হামলার স্বীকৃতি দেয়নি। ইসলাম এটি সমর্থনও করে না। প্রত্যেক ধর্মের ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে। এটি হরণ করার অধিকার কারও নেই।’