সরকারি চালানে ভুয়া সিল, কোটি টাকা আত্মসাৎ

ইয়াছিন মিয়াব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সহকারী ইয়াছিন মিয়ার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের  অভিযোগ উঠেছে। এই কাজের সঙ্গে অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও কয়েকজন কর্মচারী জড়িত বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোনালী ব্যাংকের চালান কপি জালিয়াতির মাধ্যমে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) থেকে ওই অফিসটিতে অডিট শুরু হয়। এরপরই টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রকাশ হতে শুরু করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের একাধিক সূত্র জানায়, ইয়াছিন মিয়া সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সরকারি চালান, নকল তল্লাশি, রেজিস্ট্রি ফিসহ নানা খাতের চালানের টাকা জমা দিতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায়।

অফিসের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, অডিটের সময় সোনালী ব্যাংকের চালানের কপিগুলো অসংলগ্ন মনে হলে তিনি ২৭ নভেম্বর সাবরেজিস্ট্রার  মোস্তাফিজুর রহমানকে ডেকে অফিসে থাকা চালান কপিগুলো ব্যাংকে গিয়ে মিলিয়ে দেখার পরামর্শ দেন। মোস্তাফিজুর রহমান ব্যাংকে গিয়ে চালানের কপিগুলো মেলাতে গিয়ে জানতে পারেন ব্যাংকে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অনেক চালান জমা দেওয়া হয়নি। ইয়াছিন মিয়া সোনালী ব্যাংকের চালান কপিতে ভুয়া সিলমোহর ও স্বাক্ষর করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে এসে ইয়াছিন মিয়াকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। তার ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। ইয়াছিন মিয়াকে না পেয়ে অফিস কর্তৃপক্ষ তার স্বজনদের ২৮ নভেম্বর দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের একজন কর্মচারী জানান, তদন্তে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে জানা যাবে কী পরিমাণ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সদর সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। ইয়াছিন মিয়া সোনালী ব্যাংকের ভুয়া চালান কপির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

প্রতিমাসে ব্যাংকের হিসাব বিবরণীর সঙ্গে অফিসের জমা করা  চালান কপি মিলিয়ে দেখার বাধ্যবাধকতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইয়াছিন ভুয়া হিসাব বিবরণী তৈরি করেছেন। তার হাতে সোনালী ব্যাংকে জমা দেওয়া সব চালান কপি পরীক্ষা করে দেখা হবে।’