ফেনীতে ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আসামিরা

ফেনীর ফুলগাজীর আমজাদহাট ইউনিয়নে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের মামলা তুলে নিতে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী ছাগলনাইয়ার একটি কলেজে অধ্যয়নরত। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন।

ফেনী

ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম দেবপুর গ্রামের মৃত ছবু মিয়ার ছেলে আবুল খায়ের ছোটন ওরফে ছোট্ট মিয়ার সঙ্গে ফুলগাজীর জাফর ইমাম উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয় তার ভগ্নিপতি আবুল বশর। তিনি ফুলগাজী উপজেলার ফেনাপুষ্কনি এলাকার জমিদার মিয়ার ছেলে। ওই ছাত্রীর পরিবার বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছোটন ও বশর ২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। তার শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে ও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে তারা। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি আবুল খায়ের ছোটন, তার ভগ্নিপতি আবুল বশর ও বোন হাসিনা আক্তারকে আসামী করে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ফুলাগাজী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তে বশরের ভাবী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর কাশিমপুর গ্রামের শাহ আলমের স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৪০) এর সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে।

পরে ২০১৬ সালে ২৫ মার্চ চারজনকে অভিযুক্ত করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কমকর্তা সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ। আদালত একই বছরের ১২এপ্রিল আভিযোগপত্র গ্রহণ করে।
ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা আলোচিত এ মামলায় আবুল বশরকে গ্রেফতার করলেও প্রধান আসামি আবুল খায়ের ছোটন ও তার বোন হাসিনা আক্তারকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বর্তমানে আসামীরা সবাই উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। বাদী, তার মেয়ে ও এক নিকটাত্মীয় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য প্রদান করেন। আগামী ৩ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

এতে মামলাটিতে তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ ছাড়াও ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তৎকালীন মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মো: আরিফুল ইসলাম ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. কাজী মো: আলমসহ ১২ জনকে সাক্ষী করা হয়।

পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান, এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। ইতোমধ্যে ৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে।