টেকনাফে অপহৃত আরও এক কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা ডাকাতরা

কক্সবাজারকক্সবাজারের টেকনাফে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শাহ মোহাম্মদ শাহেদ (২৫) নামে অপহৃত আরও এক কৃষককে গুলি করে হত্যা করে পাহাড়ে মাটি চাপা দিয়েছে রোহিঙ্গা ডাকাতরা। নিহত শাহেদ টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে। রোববার (২৪ মে) ডাকাতের হাতে জিম্মি থাকা অপহৃত মোহাম্মদ ইদ্রিস (২৭) পালিয়ে এসে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গত পহেলা মে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে অপহৃত আক্তার উল্লাহ (২৪) নামে এক কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল রোহিঙ্গা ডাকাতরা। এর আগ ২৯ এপ্রিল ডাকাত দল টেকনাফের মিনাবাজার এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে ৩ কৃষককে অপহরণ করে।
নিহতের পরিবার বলছে, অপহৃতদের পরিবারের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাতরা। তারা ডাকাত আবদুল হাকিম পরিচয় দিয়ে আসছিল।
হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘গত ২৫ দিন আগে ক্ষেত থেকে তিন কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায় একদল রোহিঙ্গা ডাকাত। তারপর থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল তারা। কিন্তু টাকা না পেয়ে পহেলা মে অপহৃতদের মধ্যে কৃষক আক্তার উল্লাহ গুলি করে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, বাকি দু’জনের মধ্যে রোববার সকালে ইদ্রিস নামে একজন পালিয়ে এসে জানিয়েছেন শাহ মোহাম্মদকেও গুলি করে হত্যা করে পাহাড়ে মাটি চাপা দিয়েছে রোহিঙ্গা ডাকাতরা। তারই সূত্রে ধরেই মরদেহ উদ্ধার ও ডাকাতদের ধরতে পুলিশ পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে।’

নিহত শাহ মোহাম্মদের ভাই মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ২৫ দিন আগে ক্ষেত থেকে আমার ভাইসহ তিন কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায় একদল রোহিঙ্গা ডাকাত। তারপর থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিলেন তারা। কিন্তু টাকা না পেয়ে কিছুদিন পর অপহৃতদের একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাকি দু’জনের মধ্যে ইদ্রিস নামে একজন পালিয়ে এসে জানিয়েছেন যে শাহ মোহাম্মদকেও গুলি করে হত্যা করে পাহাড়ে মাটি চাপা দিয়েছে। পরে সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে মিনাবাজার শামসু হেডম্যানের ঘোনায় ধানক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় সশস্ত্র একদল রোহিঙ্গা ডাকাত ৬ জন কৃষককে অপহরণ করে। অপহৃতরা হলেন, কৃষক আবুল হাশেম ও তার দুই ছেলে জামাল এবং রিয়াজুদ্দিন, মোহাম্মদ শাহেদ (২৫), আকতার উল্লাহ (২৪) ও মোহাম্মদ ইদ্রিস। এর মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান কৃষক আবুল হাশেমসহ তার দুই ছেলে। বাকি তিনজনদের তাদের কাছে জিম্মি থাকে। পরে অপহৃত শাহ মোহাম্মদ শাহেদের মোবাইল থেকে ওই কৃষকের পরিবারের কাছে মুক্তিপণের ২০ লাখ টাকা না দিলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় ডাকাতরা। সর্বশেষ মুক্তিপণ না পেয়ে পহেলা মে আক্তার উল্লাহ কৃষককে মাথায় গুলি করে হত্যা করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ি এলাকায় রেখে যায়। তবে মৃতদেহের পাশ থেকে একটি চিঠি পাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। চিঠিতে বাকি দুই কৃষককে জীবিত চাইলে বিশাল অঙ্কের চাঁদা দাবি করে রোহিঙ্গা ডাকাতরা।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বিষয়টি শুনে পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালানা করছে।