দর্শনার্থী মো. হাশেম বলেন, ‘তেমন পশুপাখি নেই চিড়িয়াখানাটিতে। অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মতো। ধারণা ছিল, খাঁচায় বন্দি থাকা পশুপাখি দেখাবো পরিবারের সদস্যদের। শূন্য খাঁচার এমন পরিবেশের কথা জানলে জনপ্রতি ২০ টাকা টিকিট কিনে প্রবেশ করতাম না।’
চিড়িয়াখানায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঝোপঝাড় আর জঙ্গলে ডুবে আছে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা। দীর্ঘদিন জমে থাকা পচা পানি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারিদিকে। বাঘ, সিংহ ও হনুমানসহ অধিকাংশ পশুপাখির খাঁচা শূন্য। মেছো বাঘের বাচ্চা এবং বানরসহ অল্প কিছু পশুপাখি চোখে পড়ে। তবে সেগুলোও রয়েছে অবহেলায়-অযত্নে। নিয়মিত খাবার পানি এবং খাদ্য সংকটে ভুগছে পশুপাখিগুলো। খাঁচার পাশে গিয়ে দাঁড়ালে ক্ষুধার্ত বানর ও পাখিগুলো দৌড়ে আসে। কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতায় খাঁচায় বন্দি পশুপাখিগুলো রুগ্ণ হয়ে পড়ছে।
চিড়িয়াখানার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মো. শাহ আলম জানান, বাঘ, সিংহ ও হনুমানসহ অধিকাংশ পশুপাখির খাঁচা শূন্য। এখানে তিনটি হরিণ, একটি অজগর সাপ, দুটি মেছো বাঘের বাচ্চা, তিনটি ময়ূর, একটি কালাম পাখি, ছয়টি খরগোশ, ১০টি বানর, চারটি তিতির পাখি ও তিনটি বাজ পাখি রয়েছে।
কুমিল্লা চিড়িয়াখানার এই বেহাল দশা দেখে জাকির ও নিজাম উদ্দিন নামে আরও দুই দর্শনার্থী বলেন, ‘ময়লা আবর্জনাপূর্ণ পরিবেশ এবং পচা পানির দুর্গন্ধে খাঁচায় বন্দি থাকা পশুপাখিগুলোর কষ্ট হচ্ছে। তারা অত্যন্ত ক্ষুধার্ত। চিড়িয়াখানার পরিবেশটাকে পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’ চিড়িয়াখানার প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পশুপাখি সংগ্রহের দাবি জানান তারা।
চিড়িয়াখানায় পশুপাখি সংকট এবং পরিবেশের বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে আমাদের কোনও পশুপাখি দিচ্ছে না। আমরা কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় কিছু পশুপাখি দিতে একাধিকবার লেখালেখি করেছি। বন্ধবন্ধু সাফারি পার্কেও যোগাযোগ করেছি। এছাড়া আমাদের জনবল সংকটও রয়েছে। এ কারণে পরিবেশ ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। একজনমাত্র লোক আছে, তিনি খাঁচায় থাকা পশুপাখিগুলোকে খাবার দেন। তবে আমাদের একটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে চিড়িয়াখানাটি সংস্কার করতে। এছাড়া চিড়িয়াখানাটি পশুপাখি সমৃদ্ধ করতে চেষ্টা চলছে।’