বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতন: মূল হোতা দেলোয়ার ৭ দিনের রিমান্ডে

আদালতে দেলোয়ার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার মূল হোতা দেলোয়ার হোসেনকে তিন মামলায় (ধর্ষণ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক) ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (১৮ অক্টোবর) জেলার ৩ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাশফিকুল হক এই আদেশ দেন। একই আদালত দেলোয়ার হোসেনকে ২০১৮ সালে একলাশপুরের ডাবল মার্ডারের মামলাসহ দুটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্টের আবেদন মঞ্জুর করেন।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, রবিবার সকালে দেলোয়ারকে আদালতে উপস্থাপন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান ধর্ষণ মামলায় ৭ দিন এবং তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মীর হোসেন অস্ত্র ও বিস্ফোরক মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনসহ মোট ১৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। দুপুরে শুনানি শেষে বিচারক তার ধর্ষণ মামলায় ৫ দিন এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় একদিন করে মোট ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলা তিনটি তদন্ত করছে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।

এর আগে ৬ অক্টোবর বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে র‌্যাবের দায়ের করা দুই মামলায় তাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। গত ১৩ অক্টোবর দেলোয়াকে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে ওই নারীর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৪ অক্টোবর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হলে ঘটনার মূল হোতা দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দোলোয়ার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। গত ৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তাকে আটক করে র‌্যাব। পরদিন দেলোয়ারের মাছের ঘের থেকে হাতবোমা ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব। এরপর তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জে ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই দুটি মামলা হয়।

ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নির্যাতনকারীরা ওই গৃহবধূর পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন এবং হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন, তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু, তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি; বরং হামলাকারীদের একজন তার মুখমণ্ডলে লাথি মারে এবং পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেয়। এরপর একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে। এ সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার উল্লাস প্রকাশ করে ‘ফেসবুক’ ‘ফেসবুক’ বলে চেঁচায় আরেকজন।